ভারত সফরে থাকা বাংলাদেশের সাংসদ মহম্মদ আনোয়ারুল আজিমকে কলকাতায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য সিআইডি। তবে সাংসদের মরদেহ এখনও উদ্ধার হয়নি। তবে দাবি করা হচ্ছে, তাকে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন করে তার দেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। বাংলাদেশে এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই বিষয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।
বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামী লিগের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম কলকাতা সফরে এসেছিলেন। ১৩ তারিখ থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর মেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু না পারলে কলকাতায় তাদের পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তিনি বরানগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকে কলকাতা পুলিশের সিট মামলার তদন্ত করছিল। এই হত্যার অভিযোগের পর মামলার তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ পুলিশও মামলাটির তদন্ত করছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সাংসদকে তার কলকাতার ফ্ল্যাটে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী এই হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য এবং অপরাধী কারা তা খুঁজে বের করতে একযোগে কাজ করছে। এর তলানিতে যাওয়ার জন্য আমরা সমস্ত আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুসরণ করছি।
মৃতদেহের টুকরোগুলো তিনদিন ধরে রাখা হয়েছিল
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ মে নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন সাংসদ। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী কিছু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। আনোয়ার-উলকে হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে অন্য কোথাও ফেলে দেওয়া হয়। ৩টি ভিন্ন তারিখে ফ্ল্যাট থেকে লাশের টুকরোগুলো বের করা হয়। ১৪, ১৫ ও ১৮ মে খুনিরা লাশ নিয়ে যায়। দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অপসারণের দায়িত্ব দেওয়া হয় দুজনকে। এই দু'জনই পলাতক, পুলিশের জন্য শরীরের অঙ্গ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে এবং পুলিশ সন্দেহ করছে যে শরীরের অঙ্গগুলি ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এসব দিক তদন্ত করছে সিআইডি
তথ্য প্রদান করে, সিআইডি আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী বলেছেন বুধবারই জানা যায় সাংসদকে খুন করা হয়েছে। এরপর তিনি যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেই ফ্ল্যাটে খোঁজ নিলাম। এর রহস্য উদঘাটনের জন্য এই বিষয়টি কঠোরভাবে তদন্ত করছি। এখন এই মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। শিগগিরই বিষয়টি প্রকাশ করা হবে।
বলা হচ্ছে, লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলার সম্ভাব্য দিকটি খতিয়ে দেখছে সিআইডি। আইজি নিশ্চিত করেছেন যে ফ্ল্যাটের মালিক সঞ্জীব ঘোষ বলেন, রাজ্য আবগারি বিভাগের একজন কর্মচারী, যিনি এটি আমেরিকান নাগরিক আখতারুজ্জামানকে ভাড়া দিয়েছিলেন।
সাংসদের সঙ্গে ফ্ল্যাটে দু'জন পুরুষ ও একজন মহিলাও ছিলেন
পিটিআই-এর সূত্রে জানা গিয়েছে, আনোয়ার যখন অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকেছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন দু'জন পুরুষ ও একজন মহিলা। যদিও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে একজন অজ্ঞাত পুরুষ ও মহিলা ১৫ মে থেকে ১৭ মে এর মধ্যে বেশ কয়েকবার ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, সাংসদের সঙ্গে ফ্ল্যাটে আসা তিনজনের মধ্যে অন্তত দু'জন পরে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন।