বাংলাদেশে 'অফিসিয়ালি' নিষিদ্ধ হল আওয়ামী লিগ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লিগকে সম্পূর্ণরূপে ব্যান ঘোষণা করল অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে আওয়ামী লিগের সমস্ত কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মাত্র দুই দিন আগেই আওয়ামী লিগের ‘সমস্ত কার্যকলাপে’ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। এবার সরকারি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে তার ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার, অর্থাৎ ১১ মে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন নতুন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সংশোধনী এনে একটি নির্দেশিকা জারি করেন। সেই নির্দেশিকায় আওয়ামী লিগ এবং তাদের নেতাদের সমর্থনে কোনও মিছিল, বিবৃতি বা সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উপদেষ্টা, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সরকারি নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০২৫-এর ধারা ১৮ অনুযায়ী সরকার এখন যে কোনও সংগঠন বা ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে, যদি তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ-যোগের প্রমাণ মেলে। ২০০৯ সালের পুরনো আইনে এই ধরনের বিধান ছিল না।
এই নির্দেশের পর আওয়ামী লিগ আর কোনও নির্বাচনেই অংশ নিতে পারবে না। দলটির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে দলটির সমস্ত কার্যকলাপে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরই রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কেন এই নিষেধাজ্ঞা?
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অভিযোগ, ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলনের সময় যে সহিংসতা ও গণহত্যা ঘটেছিল, তার সঙ্গে আওয়ামী লিগের বেশ কিছু নেতা জড়িত ছিলেন। সেই দায় থেকেই এই কড়া পদক্ষেপ।
২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসন শেষ হয়। আন্দোলন চরমে পৌঁছালে, তিনি ভারতে এসে আশ্রয় নেন।
আপাতত বাংলাদেশে আওয়ামী লিগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ একপ্রকার অন্ধকারে। সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং রাষ্ট্রপতির পরপর সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে চরম উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা।