Bangladesh Celebrate Eid: বাড়ি ফিরতে ঢাকায় ট্রেনের ছাদেও মানুষ! খুশির ঈদ বাংলাদেশে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উৎসব রোজার ঈদ। জামা-জুতাসহ প্রায় সব পণ্যেরই তুমুল কেনাবেচা হয় এই সময়ে। গত দুবছর করোনার কারণে ঈদের বাজার তেমন জমেনি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই সুদে-আসলে পুষিয়ে নিতে চাইছেন জনতা। পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে যাবতীয় কেনাকাটায় এখন জমজমাট বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।

Advertisement
বাড়ি ফিরতে ঢাকায় ট্রেনের ছাদেও মানুষ! খুশির ঈদ বাংলাদেশে
হাইলাইটস
  • বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উৎসব রোজার ঈদ
  • জামা-জুতাসহ প্রায় সব পণ্যেরই তুমুল কেনাবেচা হয় এই সময়ে
  • পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে যাবতীয় কেনাকাটায় এখন জমজমাট বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উৎসব রোজার ঈদ। জামা-জুতাসহ প্রায় সব পণ্যেরই তুমুল কেনাবেচা হয় এই সময়ে। গত দুবছর করোনার কারণে ঈদের বাজার তেমন জমেনি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই সুদে-আসলে পুষিয়ে নিতে চাইছেন জনতা। পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে যাবতীয় কেনাকাটায় এখন জমজমাট বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। 

শনিবার সৌদি আরবে দেখা মেলেনি ‘শাওয়াল'-র চাঁদের। তার ফলে সোমবার অর্থাৎ আজ  সৌদি আরবে পালিত হচ্ছে খুশির ঈদ। সোমবার সৌদিতে ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স, কুয়েত এবং ইরাকে ঈদ পালিত হচ্ছে। তবে ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে ঈদ হচ্ছে আগামীকাল অর্থাৎ ৩ মে মঙ্গলবার। কর্মব্যস্ততার কারণে প্রিয়জনদের জন্য কেনাকাটা করতে পারেননি যারা তারা শেষ মুহূর্তে ভিড় জমিয়েছেন মার্কেটগুলোতে। ফলে শেষ মুহূর্তে রাতভর কেনাকাটার ধুম চলেছে ঢাকা শহর জুড়ে। 

 

 

ঢাকার শপিংমলগুলোয় এখন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে ক্রেতাদের আনাগোনা। নারীদের কেনাকাটার তালিকায় ঈদের আগ দিয়ে প্রাধান্য পায়  প্রসাধনী সামগ্রী, গয়না এবং জুতো। পিছিয়ে নেই পুরুষ ক্রেতারাও। বেছে নিচ্ছেন পছন্দের পাঞ্জাবি, শার্ট কিংবা জুতা।  গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে মার্কেটে গিয়ে পছন্দের জামা-জুতা কিনতে না পারলেও, এবার তা মিটিয়ে নেওয়ার পালা শিশুদের। পছন্দের জিনিস পেয়ে খুশি তারাও। এদিকে ক্রেতার ভিড়ে বিক্রেতাদের স্বস্তি। করোনা মহামারির ক্ষতি পুষিয়ে এবার লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা। 

 

 কম বাজেটের ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক, জুতা, স্যান্ডেল, প্রসাধনী ও গয়নাসহ অন্যান্য পছন্দের জিনিসগুলো কম দামে কেনার জন্য ফুটপাত এবং অন্যান্য অস্থায়ী দোকানে ভিড় করছেন। ঢাকার র ব্যস্ততম এলাকায় ফুটপাত ও খোলা জায়গায় শতাধিক অস্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে মূলত নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের লক্ষ্য করে। বিক্রেতাদের মতে, অনেক মধ্যবিত্ত ক্রেতাও তাদের স্টলে ভিড় করছেন। কারণ তাদের কাছে শপিং মলের মতো বিভিন্ন রঙ ও ডিজাইনের পোশাক এবং অন্যান্য সব ধরনের পণ্য রয়েছে।

Advertisement

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য মতে, প্রতিবছর ঈদের আগেই ৫০-৬০ শতাংশ মানুষ দেশের  বাড়িতে ফিরেন। সে কারণে মার্কেটগুলোয় ক্রেতার ভিড় কমে না। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঘরে ফেরা মানুষ এবং স্থানীয়দের এ সময় মার্কেটকেন্দ্রিক আনাগোনা বেশি থাকে। আবার ঢাকার চাকরি করেন কিন্তু সময়ের অভাবে ঈদের কেনাকাটা করতে পারেননি সাধারণত এমন ক্রেতারাই শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার অংশ  হন। 

 

 

এদিকে  ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার  ও শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি নৌরুটে। রোববার সকাল থেকেই  ঘাট এলাকায় ঈদের বাড়ি ফেরা মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।  মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। 

সোমবার কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল ঈদযাত্রার ষষ্ঠ দিন। কমলাপুর থেকে ঈদের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। তবে আজ ভোর থেকে স্টেশনে যাত্রীর চাপ গত পাঁচ দিনের তুলনায় অনেকটাই কম। গতকাল ঈদের চাঁদ দেখা যায়নি। 

 

 

বাংলাদেশের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ আসে খুশি আর আনন্দের বার্তা নিয়ে। ঈদকে কেন্দ্র করে সমাজের প্রায় সব শ্রেণির মানুষের থাকে নানা আয়োজন। এর মধ্যে অন্যতম হলো ঈদে বাড়ি ফেরা। ঈদ উপলক্ষে নাড়ির টানে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য মানুষ তাদের কর্মক্ষেত্র বা অস্থায়ী আবাস ছেড়ে পাড়ি জমায় জন্মভিটায়। কেউ বাসে, কেউ ট্রেনে কিংবা লঞ্চে। সংখ্য়াটা  কম হলেও বাংলাদেশের অনেকেই এখন বাড়িতে যান আকাশপথে। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের বিশেষ করে নগরের উন্নয়ন ঘটেছে দ্রুতগতিতে। নগরগুলো আজ শিল্পায়নের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মূলত কর্মসংস্থানের আশায় মানুষ নগরে পাড়ি জমায়। সঙ্গত কারণে ঈদ কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশের প্রান্তিক এলাকায় আবার ছড়িয়ে পড়ে। ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া এ দেশের মানুষের কাছে অনেকটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঈদ উৎসব কেন্দ্র করে বাড়ির ফেরার এমন ঘটনা বিশ্বে বিরল নয়। জানা গেছে, এবারের ঈদুল ফিতরে ইন্দোনেশিয়ার ৯ কোটি মানুষ তাদের কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে যাবে। আর বাংলাদেশে শুধু রাজধানী শহর ঢাকা থেকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ ঈদের আগে বাড়ি ফিরতে আগ্রহী। এই হিসাব অনুযায়ী ঈদের আগের দিন পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ঢাকা  ত্যাগ করছেন বাড়ি ফেরার উদ্দেশে। রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। এদিকে গত  শুক্রবার থেকে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের ছুটি শুরু হয়েছে। ফলে গত বৃহস্পতিবার থেকেই বেড়েছে মানুষের বাড়ি যাওয়ার চাপ। শুক্র-শনি ও মে দিবস মিলিয়ে টানা ছয়দিনের ছুটি হচ্ছে এবার। রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদর চাপ বাড়ছে।  এদিকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আজ থেকেই আগাম ঈদ পালিত হচ্ছে। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল থেকে প্রতিবারের ন্যায় এবারও এসব এলাকার মানুষ ঈদ উদযাপন করছেন। 
 

POST A COMMENT
Advertisement