গতবছর পুজোয় কুমিল্লায় পুজোমণ্ডপ, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং আগুন লাগানোর ঘটনাকে ঘিরে গোটা বাংলাদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। একের পর এক জেলায় দুর্গামণ্ডপে ভাঙচুর, হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর-লুঠপাট, হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামলাতে শেষপর্যন্ত হাসিনা সরকারকে বিজিবি মোতায়েন করতে হয়েছে। এবার তাই আগে থেকেই সতর্ক বাংলাদেশ সরকার। হাসিনা সরকার জানিয়ে দিয়েছে, এবার প্রতিটি পুজো মণ্ডপে CCTV ক্যামেরা রাখা বাধ্যতামূলক।
সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে হাসিনা জানিয়েছিলেন, তাঁর মতই দেশে সমান অধিকার আছে হিন্দুদেরও। জন্মাষ্টমীর দিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে এই বার্তা দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার মতে, পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় অনেক বেশি দুর্গাপুজার মণ্ডপ হয় ঢাকা শহরে। এবার যাতে পুজোকে ঘিরে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আগে থেকেই তৎপর হয়েছে হাসিনা সরকার। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, এই বছর প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা রাখা বাধ্যতামূলক। সঙ্গে মণ্ডপেই পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক এবং ভ্রাম্যমাণ আলাদত থাকবে।
রবিবার ঢাকায় সচিবালয়ে দুর্গাপুজো উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি জানান, আগামী ১ থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপুজো উদ্যাপিত হবে বাংলাদেশে। এবছর প্রতিবেশী দেশটিতে ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে দুর্গা পুজো হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার এক হাজারের বেশি মণ্ডপে পুজো উদযাপিত হবে। পুজো ঘিরে গুজব ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতেও তৎপর প্রশাসন। গুজবের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যেকোনো সমস্যা হলে ৯৯৯–এ কল করা যাবে। পাশাপাশি আসাদুজ্জামান খান বলেন, আজান ও নামাজের সময় শব্দের ব্যবহার সহনীয় থাকবে।
অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দুর্গাপুজোর শুরু থেকে বাংলাদেশে শেষ পর্যন্ত সারাদেশের মণ্ডপগুলোতে ২৪ ঘণ্টা প্যারা মিলিটারি সদস্যদের রাখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গত বছরের সন্ত্রাসের কথা মাথায় রেখেই এবার বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছেন বাংলাদেশের পুজোর আয়োজকরাও ৷ গত শুক্রবার (৯সেপ্টম্বর, ২০২২) সকাল ১০টায় (বাংলাদেশের সময় অনুসারে) ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয় ৷ এই বৈঠকে বাংলাদেশের ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৬২টি জেলা থেকেই প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন ৷ সেই বৈঠকে মোট ২১ দফার একটি নির্দেশিকা প্রস্তাব আকারে পেশ করা হয় এবং গৃহীত হয় ৷ যার মোদ্দা কথা হল, পুজোর সময় সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে সবরকমের সহযোগিতা করা হবে ৷ যাতে গত বছরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে ৷