বাংলাদেশের ভোট ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন। সম্প্রতি এক নতুন 'সংশোধনী অধ্যাদেশে'র খসড়া পেশ করেছে সেদেশের নির্বাচন কমিশন (EC)। তাতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব যোগ করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল ‘নো ভোট’ অপশন। এর পাশাপাশি ভোটের সময় সেনাবাহিনীকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার অংশ হিসেবে যোগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়া অনুযায়ী এও বলা হয়েছে যে, এবার থেকে ভোটে প্রার্থীরা সর্বোচ্চ দু'টি আসনে একসঙ্গে দাঁড়াতে পারবেন। ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিক প্রতিবেদন সূত্রে এমনটাই খবর।
নোটা থেকে ‘নো ভোট’?
২০১৩ সাল থেকে ভারতে ভোট ব্যবস্থায় NOTA (None of the Above) এর অপশন আনা হয়। এবার সেই ধরনেরই নিয়মের প্রস্তাব বাংলাদেশেও। খসড়ায় বলা হয়েছে, যদি কোনও আসনে একজনই প্রার্থী থাকেন, সেক্ষেত্রেও তাঁকে ‘নো ভোটে’র বিরুদ্ধে লড়তে হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় আগেভাগে জয় ঘোষণা হবে না।
যদি দেখা যায়, কোনও কেন্দ্রে ‘নো ভোটে’র সংখ্যা, কোনও প্রার্থীর পাওয়া ভোটের চেয়েও বেশি, সেক্ষেত্রে নতুন সময়সূচি ঘোষণা করে ফের ভোট করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০০৮ সালেই ভোটের আগে এই নিয়ম চালু হয়েছিল বাংলাদেশে। কিন্তু ২০১৪ সালের আগেই তা বাতিল করে দেওয়া হয়।
ফের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আর্মি, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর উপর ভোটের সময় শান্তি রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হবে।
এর আগেও ভোটে সেনা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকত। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর আওয়ামী লিগ সরকার তাদের বাদ দেয়। ফলে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটে সেনাবাহিনীকে শুধু ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবেই মোতায়েন করা হয়েছিল।
নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি
খসড়া অনুযায়ী, ভোটে কারচুপি ধরা পড়লে গোটা নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করার ক্ষমতা পাবে নির্বাচন কমিশন।
এর আগেও বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের হাতে সেই ক্ষমতা ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে আওয়ামী লিগ সরকার সেই নিয়ম বাতিল করে দেয়।
এর পাশাপাশি, প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনও নির্বাচিত প্রার্থীর হলফনামা বা আয় ব্যয়ের বিবৃতিতে অসঙ্গতি বা মিথ্যা ধরা পড়লে পাঁচ বছরের মধ্যেই তাঁর পদ বাতিল করা হবে।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাসুদ জানান, 'খসড়া প্রায় প্রস্তুত। শুধু প্রবাসী ভোটারদের বিষয়টিই পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এরপরই আইন মন্ত্রকে পাঠানো হবে।'