Bangladesh Pakistan: 'কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি,' পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা

বাংলাদেশে গিয়ে ইউনূস সরকারের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার। কিন্তু বৈঠক শেষে তাঁর করা মন্তব্যকে সমর্থন করতে পারলেন না ইউনূসের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের সামনেই দুই প্রতিনিধির দু'রকম মত প্রকাশ্যে এল।

Advertisement
'কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি,' পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টাবাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা ও পাক বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক
হাইলাইটস
  • বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক পাক বিদেশমন্ত্রীর
  • পাক বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য একমত নন ইউনূসের বিদেশ উপদেষ্টা
  • বৈঠকের পর প্রকাশ্যে এল দুই দেশের ভিন্নমত

ভারতের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার পরিকল্পনার প্রথম চেষ্টাই কার্যত ব্যর্থ হল পাকিস্তান ও বাংলাদেশের। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে রবিবার বৈঠক করেন বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। কিন্তু বৈঠক শেষে তৌহিদ জানিয়ে দেন তিনি ইশাক দারের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নন। 

উল্লেখ্য, পাক বিদেশমন্ত্রী দাবি করেন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে অমীমাংসিত তিন সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। তবে তৌহিদের বক্তব্য, সমস্যার সমাধান হয়নি। কেবল সমস্যাগুলি সমাধানের বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

কোন কোন সমস্যা নিয়ে দ্বিমত?
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে কিছু বিষয়ে সমস্যা অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে। প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাক সেনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতে বলেছিল বাংলাদেশ। এছাড়াও যুদ্ধের জন্য ক্ষতিপূরণ, সম্পদের ভাগ দেওয়ারও দাবি জানায় ঢাকা। আর এই অমীমাংসিত বিষয়গুলির সমাধান হয়ে গিয়েছে বলে রবিবার বৈঠক শেষে ঘোষণা করে দেন ইশাক দার। যা মোটে ভাল ভাবে নেয়নি বাংলাদেশ। এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইউনূসের বিদেশ উপদেষ্টা বলেন, 'আমি অবশ্যই একমত নই। একমত হলে তো সমাধান হয়ে যেত।' অর্থাৎ তৌহিদ যে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়েছেন, তা কথাতেই স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে।

কী বক্তব্য ইশাক দারের?
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদের পাশে দাঁড়িয়েই ইশাক বলেন, 'অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।' বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে 'এক পরিবার, দুই ভাই' বলেও সম্বোধন করেন তিনি। ইশাক আরও বলেন, '১৯৭৪ সালের নথি দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরপর জেনারেল পারভেজ মুশারফ বাংলাদেশে আসেন এবং প্রকাশ্যে খোলা মনে সমস্যাগুলির সমাধান করেন। দু'বার সমাধান হয়েছে অমীমাংসিত বিষয়গুলির। প্রথমে ১৯৭৪ সালে, তার পরে ২০০০ সালের শুরুতে। পরিবারের মধ্যে, দুই ভাইয়ের মধ্যে যখন বিষয়টির সমাধান হয়েই গিয়েছে, তখন দু’দেশকেই এগিয়ে যেতে হবে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে।' 

Advertisement

উল্টো সুর তৌহিদের মুখে 
অমীমাংসিত সমস্যার ‘দু’বার সমাধান’-এর বিষয়ে তৌহিদকেও প্রশ্ন করা হয়। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সমস্যার কোনও সমাধান এখনও হয়নি। বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা চাই, হিসাবপত্র হোক, টাকাপয়সার ব্যাপার সমাধান হোক। আমরা চাই, এখানে যে গণহত্যা হয়েছে, সেটার ব্যাপারে দুঃখপ্রকাশ করুক, ক্ষমা চেয়ে নিক। আমরা চাই, আটকে পড়া মানুষগুলোকে তারা ফেরত নেবে। আমি বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত ভাবে তুলে ধরেছি।' ইশাকের দাবি প্রসঙ্গে তৌহিদের মন্তব্য, 'আমি অবশ্যই একমত না। একমত হলে তো সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। আমরা আমাদের অবস্থান বলেছি। ওঁরা ওঁদের অবস্থান তুলে ধরেছেন।'

 

POST A COMMENT
Advertisement