বাংলাদেশে খুন হিন্দু যুবক বুধবার রাতে গণপিটুনিতে খুন হয়েছেন বাংলাদেশের রাজবাড়ির পাংশা এলাকার হিন্দু যুবক অমৃত মণ্ডল। এলাকায় সম্রাট নামে পরিচিত ওই যুবক হিন্দু হওয়ায় তাঁকে গণরোষের শিকার হতে হয়েছে। এই অভিযোগ সামনে আসছে। এই ঘটনার পর মহম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা। কারণ, বাস্তবিকই ইউনূসের অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেই দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার বেড়েছে। কয়েকদিন আগেই জ্যান্ত জ্বালিয়ে খুন করা হয়েছে দীপু দাস নামের এক হিন্দু যুবককে।
এই পরিস্থিতিতে চাপের মুখে পড়ে বিবৃতি জারি করে ইউনূস প্রশাসন দাবি করল, সম্রাট নামের ওই যুবক সাম্প্রদায়িক কারণে মারা যাননি। তিনি দুষ্কৃতী হওয়ায় গণরোষের শিকার হয়েছেন। পুলিশ এমনটাই দাবি করেছে। যদিও তাতেও সমালোচনা কমছে না। নেটিজেনদের প্রশ্ন, 'হিন্দু যুবকদেরই কেন খুন করা হচ্ছে? আইনের শাসন কোথায়?'
বৃহস্পতিবার রাতে জারি করা বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকার জানায়, তারা এই ঘটনার উপর নজর রাখছে। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার করা হচ্ছে।
ইউনূস সরকার এরপরই জানায় এই ঘটনা সাম্প্রদায়িক নয়। বিবৃতিতে লেখা, 'পুলিশের প্রতিবেদন এবং প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে এটি প্রমাণিত যে, ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ছিল না। বরং, চাঁদাবাজি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট সহিংসতা। অমৃত মণ্ডল (ওরফে সম্রাট) নামে একজন শীর্ষ পর্যায়ের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত নিহত ব্যক্তি চাঁদাবাজির টাকা দাবি করতে এলাকায় এসেছিলেন। স্থানীয় জনতার সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষে তিনি প্রাণ হারান। রেকর্ড থেকে জানা যায় সম্রাট ২০২৩ সালে দায়ের করা হত্যা এবং চাঁদাবাজি সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর মামলার একজন ওয়ান্টেড সন্দেহভাজন ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।'
নিজের দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে না পারলেও গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত খবরকে মিথ্যা বলেও দাবি করেছে সরকার। এমনকী গোটা ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও দাবি করে ইউনূস প্রশাসন। বিবৃতিতে উল্লেখ, 'একটি নির্দিষ্ট মহল নিহতের ধর্মীয় পরিচয় তুলে ধরে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এই বর্ণনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই ধরনের প্রচার সামাজিক সম্প্রীতির ক্ষতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর ঝুঁকি তৈরি করে।'
প্রসঙ্গত, দীপু দাসের হত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। রাষ্ট্রসংঘও বাংলাদেশে মানবাধিকার এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এরই মধ্যে ফের এক হিন্দু যুবক পিটিয়ে খুন হওয়ায় ইউনূসের উপর চাপ বাড়ল বলেই অনেকে মনে করছেন।