Bangladesh HSC Exam: বাংলাদেশে ১২ ক্লাসের বোর্ড পরীক্ষায় রেকর্ড ফেল, শিক্ষারও বারোটা বেজে গেছে

বাংলাদেশে চলতি বছরের ১২ ক্লাসের বোর্ড পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ১৮.৯৫ শতাংশ।

Advertisement
বাংলাদেশে ১২ ক্লাসের বোর্ড পরীক্ষায় রেকর্ড ফেল, শিক্ষারও বারোটা বেজে গেছে২০০ বেশি স্কুলে সব ফেল

বাংলাদেশে চলতি বছরের ১২ ক্লাসের বোর্ড  পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ১৮.৯৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফলাফল প্রকাশ করে। বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির এ ফল প্রকাশ করেন।

কোন বোর্ডে কত পাসের হার?
এবার ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪.৬২ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৫৯.৪০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৫২.৫৭ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ৫৭.৪৯ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে পাসের হার ৫১.৫৪ শতাংশ। কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৪৮.৮৬ শতাংশ। যশোর বোর্ডে পাসের হার ৫০.২০ শতাংশ। বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৬২.৫৭ শতাংশ। সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৫১.৮৬ শতাংশ। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫.৬১ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৬২.৬৭ শতাংশ। বিগত ৫ বছরের মধ্যে এবার পাসের হার সর্বনিম্ন। এবার ৩৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একশভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে, অন্যদিকে ২০২টি প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের পাসের হার শূন্য। গত বছর একশভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৬৫টি। আবার একশভাগ পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কমেছে এক হাজার ৪৩টি। সার্বিক দিক বিবেচনায় এবার ভয়াবহ ফল বিপর্যয় ঘটেছে। 

পাসের হারে এইচএসসি ফিরলো ২০০৪ সালে!
 এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বাংলাদেশে ২০০২ সাল পর্যন্ত ডিভিশন পদ্ধতি অর্থাৎ, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ছিল। ২০০৩ সাল থেকে জিপিএ পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে পাঁচটি স্কেলে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। নতুন এ পদ্ধতি চালুর পর শিক্ষার্থীদের বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগে। জিপিএ পদ্ধতি চালুর প্রভাব পড়ে ২০০৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে। সে বছর পাসের হার ছিল ৩৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০০৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ দশমিক ৭৪ শতাংশে। এরপর থেকে পাসের হার ক্রমেই বাড়তে থাকে। তবে করোনার কারণে কয়েক বছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০২৪ সালে পূর্ণ নম্বর, পূর্ণ সিলেবাস ও পূর্ণ সময়ে ফেরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে কয়েকটি পরীক্ষা হওয়ার পর শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। এতে পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। এ আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লিগ সরকারের পতন ঘটে। সরকার পরিবর্তনের পর আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দাবি করে পরীক্ষা আর না নেওয়ার জন্য শুরু হয় আন্দোলন। তাতে বাধ্য হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা বাতিল করে। ওই বিষয়গুলোর পরীক্ষা না নিয়ে এসএসসির ফল  বিবেচনা করে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে ফল প্রকাশ করা হয়। এতে পাসের হার ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ। পাঁচ বছর পর এবার এইচএসসি  পরীক্ষা স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। এজন্য ফল  নিম্নমুখী বলে মনে করছেন  শিক্ষা বোর্ডের  কর্তারা। 

Advertisement

এবার ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে তুলনামূলক বেশি অকৃতকার্য হয়েছেন। এটা সার্বিক ফলাফলের ওপরে বড় প্রভাব ফেলেছে। আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা কাউকে কোনো ছক বেঁধে দিইনি বা নির্দিষ্ট করে দিইনি যে এইভাবে নম্বর ছাড় দেবেন অথবা ওভারমার্কিং (যা প্রাপ্য নয়, তার চেয়ে বেশি নম্বর দেওয়া) করবেন, বেশি বেশি দিয়ে পাসের হার বাড়াতে হবে, এ রকম কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’ তিনি বলেন, ‘গত এসএসসি পরীক্ষার সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলে দেওয়া হয়েছে নিয়ম মোতাবেক চলবে। বোর্ড পরীক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের নিয়মটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। সঠিক মূল্যায়নের জন্য এবার সময়ও বাড়িয়ে দেওয়া হয়।’

POST A COMMENT
Advertisement