ওসমান হাদি (বাঁ দিকে), শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি (ডান দিকে)চরমপন্থী ভারত বিরোধী নেতা ওসমান হাদির হত্যার ঘটনায় উত্তাল বাংলাদেশ। তার হত্যাকারীদের ধরতে জোরদার তদন্ত চালাচ্ছে বাংলাদেশের ইউনূস প্রশাসন। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই তদন্তে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী লুকআউট নোটিশ জারি করা হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশে তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, সন্দেহভাজন ওই হত্যাকারীর নাম ফয়সাল করিম মাসুদ। রবিবার ঢাকার একটি আদালত তাকে বাংলাদেশ ছাড়তে নিষেধ করেছে। তদন্তকারীরা তাকে হাদির হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মাসুদ সহ হামলায় জড়িত অন্যান্যদের বিরুদ্ধেও লুকআউট নোটিশ জারি করা হয়েছে।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর ধারণা, মাসুদ এখনও বাংলাদেশেই রয়েছে। গ্রেফতারি এড়াতে সে ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করছে। তাকে ধরতে তদন্তকারীদের একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে। তার গতিবিধিতে নজর রাখতে গোয়েন্দা তৎপরতাও জোরদার করা হয়েছে।
৩২ বছরের চরমপন্থী ভারত বিরোধী নেতা শরিফ ওসমান হাদি গত সপ্তাহে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার হাসপাতালেই মৃত্যু হয় হাদির। ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় রিকশতে যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই হামলাকারী হাদির মাথায় গুলি করেছিল বলে অভিযোগ। মাথায় গুলি লাগায় তার ব্রেন স্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে কোনওমতেই আর বাঁচানো যায়নি এই যুবনেতাকে।
তার মৃত্যুর পর বাংলাদেশজুড়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভে নামে সমর্থক ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারি এবং কঠোর শান্তির দাবি জানায় তারা। কিন্তু বিক্ষোভ এতটাই চরমে ওঠে, সংবাদমাধ্যমের অফিসে আগুন লাগানো হয়। ভাঙচুর করা হয় বাংলাদেশের সংস্কৃতির পীঠস্থান ছায়ানট। হামলা চালানো হয় ভারতীয় দূতাবাসেও। সংখ্যালঘু ব্যক্তিকে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া, শিশুকে গুলির মতো ঘটনাও ঘটতে থাকে। এর মাঝেই রটে যায়, হাদির হত্যাকারী ভারতে পালিয়েছে। যদিও সেই রটনা অসত্য তা প্রমাণ হয়েছে তদন্তকারীদের দাবিতেই।