ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে হঠাত্ সুর বদলে গেল বাংলাদেশে (Bangladesh) মহম্মদ ইউনূসের (Muhammad Yunus) নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের। কার্যত নমনীয় মনোভাব দেখাল বাংলাদেশ। তাদের বক্তব্য, আর কোনও উপায় নেই।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে নানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে বারবার সরব হয়েছে ভারত। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতেই আশ্রয়ে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এহেন পরিস্থিতিতে একটি সাক্ষাত্কারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস বললেন, 'ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত করতেই হবে। কারণ বাংলাশের চাহিদা এবং ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্ক এবং আমাদের মধ্যে অনেক কিছুর মিল রয়েছে। আমাদের একটি পারস্পরিক ইতিহাস আছে। তাই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনও উপায় নেই।'
শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি
অগাস্টের শুরুতে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন হিংসাত্মক রূপ নেয়। বাংলাদেশে একের পর এক হত্যায় কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের কারণে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয় এবং ৫ অগাস্ট তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে আসেন। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে অনেক সোচ্চার হয়েছিল এবং এখন দুই দেশের সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যেই হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে এবং বাংলাদেশের শীর্ষ প্রসিকিউটর সহ অনেকেই তাঁর প্রত্যর্পণের দাবি করছেন।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক
ইউনূস ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধানের ওপরও জোর দেন ইউনূস। তিনি বলেন, 'সীমান্তের ওপারে জল বণ্টন ও মানুষের চলাচলের সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমাদের প্রশাসন এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য ভারতের সঙ্গে একসাথে কাজ করবে। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং এসব সমস্যা সমাধানের আন্তর্জাতিক উপায় রয়েছে। আমরা সেই পথগুলি অনুসরণ করব এবং ভাল ফল পাব।'
হাসিনাকে টার্গেট করলেন ইউনূস
ভারতে আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। তিনি দেশের অর্থনীতিকে তলিয়ে দিয়েছেন। সরকারি চ্যানেল, ব্যাঙ্কএবং অন্যান্য মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে টাকা তোলা হয়েছে। চুক্তিগুলি বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে নয়, তাঁর পরিবারের স্বার্থে। যখন সরকার ভুল পথে যায়, আপনি এই ধরনের খারাপ জিনিসগুলি দেখতে পান, অর্থনীতি একটি খাদে চলে যায় এবং তারপরে এরকম ঘটনা ঘটতে থাকে।'
বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে?
ইউনূস বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়েও কথা বলেছেন। তবে নির্বাচনের কোনও নির্দিষ্ট তারিখ দেননি। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, 'এটা আমাদের ম্যান্ডেট। আমরা নির্বাচনে আসতে চাই এবং একটি স্বচ্ছ নির্বাচন চাই, একটি সুন্দর নির্বাচন চাই। তারপর যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা বিজয় উদযাপন করতে চায় এবং নতুন নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি ঘটতে হবে। আমরা এখনও তারিখ এবং সময় বলতে পারি না।'