বাংলাদেশে গত বছর বিদ্রোহের পর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে আসেন শেখ হাসিনা। সেই সময় থেকেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ ক্রমাগত ভারতের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। এখন শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বড় ধরনের বিবৃতি এসেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইনমন্ত্রী আসিফ নজরুল বলেছেন, 'ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না পাঠালে তা হবে ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।' ঢাকায় এক সংবাদিক সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে ভারত সরকারকে চিঠিও দিয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে যেকোনও মূল্যে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে উত্থাপন করে হস্তক্ষেপ দাবি করবে। আসিফ নজরুল আরও বলেন, আমরা সাধ্যমতো করছি। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবে। প্রয়োজনে এ জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তাও চাওয়া হবে।
শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত সরকার
গত বছরের ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাত হয়। একই দিন শেখ হাসিনা তার পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে আসেন। বর্তমানে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করার পর বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়, যার ক্ষমতা এখন মহম্মদ ইউনূসের হাতে। ইউনূস সরকার প্রতিনিয়ত ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে আসছে। সরকার বাংলাদেশেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা করেছে এবং তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার পাসপোর্টও বাতিল করেছে বাংলাদেশ সরকার। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভারত সরকারের এই সহায়তায় শেখ হাসিনা আরও কিছুদিন ভারতে থাকতে পারেন। তবে ভারতে শরণার্থী আইন না থাকায় শেখ হাসিনাকে এখনো কোনও শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বিদ্রোহের নামে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দলের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই ভিডিওটি শেয়ার করা হয়। ভিডিওতে শেখ হাসিনা বলেছেন যে শুধুমাত্র ঐশ্বরের কৃপায় তিনি তার রাজনৈতিক কেরিয়ারে বেশ কয়েকটি গুপ্তহত্যার চেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, “আমি এবং আমার বোন শেখ রেহানা বাঁচতে পেরেছি। আমরা যদি ২০-২৫ মিনিট দেরি করতাম, তাহলে আমাদের হত্যা করা হত।"