বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়ককৃষ্ণ দাসের জামিন খারিজ করে দিল চট্টগ্রামের আদালত। দেশদ্রোহের অভিযোগে সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে পেশ করা হয় আদালতে। তাঁর হেফাজত চায়নি পুলিশ। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে হিন্দুদের উপর চলছে অত্যাচার। মারধর, ঘরবাড়ি লুঠ থেকে জোর করে চাকরি ছাড়ানোর মতো একাধিক অভিযোগ উঠেছে। হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। হিন্দুদের একজোট করার কাজ করেছিলেন। সে কারণেই তিনি বাংলাদেশের নতুন সরকারের নিশানায় চলে এসেছিলেন। সোমবার দুপুরে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে দেশদ্রোহের ধারা। জামিন না খারিজ করলেও চট্টগ্রামের আদালত নির্দেশ দিয়েছে, জেলের মধ্যে চিন্ময়কৃষ্ণ যাতে সমস্ত রকম ধর্মীয় আচার-আচরণ করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। এ দিন আদালত চত্বরে সংবাদ মাধ্যমকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বার্তা দেন,'পূর্বপরিকল্পিত সমস্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে হিন্দুদের'।
জাতীয় পতাকার অবমাননা!
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন ইউনূস সরকার হিন্দুদের কণ্ঠস্বর চিন্ময় প্রভুকে টার্গেট করার সুযোগ খুঁজছিল। ২৫ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার নিউ মার্কেটে হিন্দু সংগঠন 'সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট' বিরাট বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছিল। ওই বিক্ষোভে কয়েকজন যুবক বাংলাদেশের পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা তুলে দেন বলে অভিযোগ। চিন্ময় প্রভুকে গ্রেফতারির কারণ হিসেবে ওই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। তারা জানিয়েছে, দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। যদিও চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে ছিলেন। ফলে এই গোটা অভিযোগই সাজানো। হিন্দুদের কণ্ঠস্বর রোধ করার চেষ্টা করছে এই ইউনূস সরকার।
চিন্ময় প্রভু কে?
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিশিষ্ট নেতা এবং ইসকন চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের সভাপতি। চিন্ময় প্রভু নামে তাঁকে সকলে চেনেন। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে হিন্দুরা একজোট হয়েছে। বাংলাদেশে ইসকনের ৭৭টিরও বেশি মন্দির রয়েছে। ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।