দিকে দিকে ভারত বিরোধী স্লোগান, বয়কটের ডাক, হিন্দুদের হামলায় অশান্তি অব্যাহত বাংলাদেশে। লাগাতার ভারতকে চোখ রাঙাচ্ছে বাংলাদেশ। এর পিছনে কোন শক্তি কাজ করছে সেসব প্রশ্ন ব্যতিরেকে জেনে নিন ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ হলে একার ক্ষমতায় লড়তে পারবে বাংলাদেশ? সেনাবাহিনী, অস্ত্র, যুদ্ধের সরঞ্জামে কোন দেশ কোথায় দাঁড়িয়ে দেখে নিন।
ভারতে ১৪০ কোটির দেশে ১৪.৫৫ লক্ষ সক্রিয় সেনা, ১১.৫৫ লক্ষ রিজার্ভ সেনা, ২৫.২৭ প্যারামিলিটারি, ২২৯৬টি এয়ারক্রাফ্ট, ১৮টি সাবমেরিন রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই সংখ্যা অর্ধেকেরও অর্ধেক। বিশ্বের ১৪৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের সামরিক র্যাঙ্কিং ৩৭। তবে চিন বা অন্য কোনও ইসলামিক দেশের সঙ্গে হাত মেলালে চিত্রটা হবে অন্যরকম। ১৬.৭২ কোটি জনসংখ্যার একটি দেশের জিডিপি ভারতের তুলনায় ৯ গুণ কম। বাংলাদেশের রপ্তানির চেয়ে ভারতের রপ্তানি ১৩ গুণ বেশি।
বাংলাদেশের আয়তন ১ লাখ ৪৮ হাজার বর্গ কিলোমিটারের বেশি। রয়েছে ৫৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসীমা। আন্তর্জাতিক সীমান্তের দৈর্ঘ্য ৪৪১৩ কিমি। যদি আমরা বাংলাদেশের সব সেনাবাহিনীকে একত্রিত করলে, মোট সেনার সংখ্যা ৬৯.৬৩ লক্ষ। যার মধ্যে ১.৬৩ লক্ষ সক্রিয়।
বাংলাদেশের কোনও রিজার্ভ ফোর্স নেই। তবে ৬৮ লক্ষের আধাসামরিক বাহিনী আছে। বিমান বাহিনীতে ১৭,৪০০ জন, সেনাবাহিনীতে ১.৬০ লক্ষ এবং নৌবাহিনীতে ২৫,১০০ জন সেনা রয়েছে।
মোট ৪৪টি যুদ্ধবিমান, ২৬টি আক্রমণের জন্য প্রস্তুত
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মোট ২১৬টি বিমান রয়েছে। যার মধ্যে ১৩০টি 'রেডি মোডে' রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ জন যোদ্ধা। যার মধ্যে ২৬টি প্রস্তুত রয়েছে। ১৬টি পরিবহন বিমান রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি উড়তে চলেছে। এছাড়া, ৮৭ জন প্রশিক্ষক রয়েছেন। যার মধ্যে ৫২টি সক্রিয়। চারটি বিশেষ মিশনের বিমানের মধ্যে দু'টি প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশের মোট ৭৩টি হেলিকপ্টার রয়েছে। যার মধ্যে ৪৪টি সক্রিয় রয়েছে।
৩২০টি ট্যাঙ্ক, ৪৩৭টি আর্টিলারি এবং ৭১টি রকেট লঞ্চার
বাংলাদেশে স্থল সেনাবাহিনীর কাছে ৩২০টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। যার মধ্যে ২২৪টি সক্রিয় মোডে রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রয়েছে ১৩ হাজার ১০০টি। যার মধ্যে ৯,১৭০টি সর্বদা সক্রিয়। সেনাবাহিনীর ২৭টি স্ব-চালিত আর্টিলারি অর্থাৎ স্বয়ংক্রিয় কামান রয়েছে। যার মধ্যে ১৯টি সক্রিয়। ৪৩৭টি টাওয়াড আর্টিলারি রয়েছে। মানে টানা কামান। এর মধ্যে ৩০৬ সর্বদা মোতায়েন থাকে। ৭১ টি মাল্টি-লঞ্চ রকেট সিস্টেম রয়েছে।
শক্তিশালী নৌবাহিনী নয়, কিছু ছোট যুদ্ধজাহাজ আছে
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মোট ১১৭টি সম্পদ রয়েছে। মানে যানবাহন, জাহাজ বা জাহাজ। কোন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, হেলিকপ্টার ক্যারিয়ার, ডেস্ট্রয়ার নেই। সাতটি ফ্রিগেট, ৬টি করভেট এবং ২টি সাবমেরিন রয়েছে। এর বাইরে ৫৫টি পেট্রোল ভেসেল রয়েছে। পাঁচটি মাইন ওয়ারফেয়ার আছে। অর্থাৎ সমুদ্রে ল্যান্ডমাইন বিছানো জাহাজ।
বাংলাদেশের জিডিপি এবং রপ্তানির তুলনা... সম্ভব নয়
আইএমএফের তথ্য অনুসারে, এই বছরের আগস্টে ভারতের জিডিপি ছিল ৩.৯৪ ট্রিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশি অর্থনীতির ৪৫৫ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ৯ গুণ বেশি। ভারত গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ৭৭৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছিল। যেখানে বাংলাদেশ ব্যয় করেছে ৫৭.৫ বিলিয়ন ডলার। ভারত রপ্তানি করেছে ১৩ গুণ বেশি।
ব্যবসা থেকে ভারত সরে গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে
সিএমআইই-এর তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ১৬৫ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ ১.০৭ লক্ষ কোটি টাকা। ভারত গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪২৬ শতাংশ আমদানি করেছে, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ১৫,২৬৮ কোটি টাকা হয়েছে। এ বছর ভারত বাংলাদেশ থেকে ৪,৯৩২ কোটি টাকার তৈরি পোশাক, ২৬৯৭ কোটি টাকার টেক্সটাইল এবং ২১৪০ কোটি টাকার প্রকৌশল সামগ্রী আমদানি করেছে।
ভারত এ বছর বাংলাদেশে মোট ৯১,৬১৪ কোটি টাকা রপ্তানি করেছে। গত ১০ বছরে এটি ১৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত বাংলাদেশে ১৭,৮১৭ কোটি টাকার টেক্সটাইল সামগ্রী রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে সুতো, ফ্যাব্রিক এবং অন্যান্য। ১৬,৮৩৭ কোটি টাকার ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য এবং ৮৯৭৭ কোটি টাকার সম্পর্কিত পণ্য। ফলে ভারতকে পাশে না পেলে ব্যবসা, অর্থনীতিতে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।