হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে যে কী নিদারুণ অরাজকতা চলছে, তার আরও একটি উদাহরণ হল, গণপিটুনিতে মৃত্যু মিছিল। কোনও সভ্য দেশে এই ধরনের মধ্যযুগীয় অবস্থা চলে না, যা বাংলাদেশে চলছে। চলতি মাসেই ১০ দিনে ১৩টি গণপিটুনির ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে। ১৩ জন গুরুতর আহত। এই আক্রান্ত ও মৃতরা বেশির ভাগই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ।
গোটা বাংলাদেশজুড়েই হিন্দু নিধন চলছে
২০২৪ সালের অগাস্টে হাসিনা সরকারের পতনেই বাংলাদেশে শেষের শুরু বলা যায়। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো'-র রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, গোটা বাংলাদেশজুড়েই হিন্দু নিধন চলছে। দেশটিতে আইনশৃঙ্খলা যে শেষ, এই ঘটনাগুলি তারই প্রমাণ। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএফএস) তথ্যে দাবি, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৭৮ জন। এর সঙ্গে অগাস্ট মাসের প্রথম ১০ দিনের ঘটনা যুক্ত করলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৭। আহত হয়েছেন ২৬৬ জন।
গণপিটুনির পর চোখ উপড়ে নেওয়ার চেষ্টা
গত ৯ অগাস্ট রংপুরে রংপুরে চোর সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে। ওই একই দিন মাদারীপুরে চোর সন্দেহে তিনজনকে গণপিটুনির পর একজনের চোখ উপড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। দুজনকে হত্যা করা হয় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায়। তাঁদের নাম রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাস। সম্পর্কে তাঁরা ছিলেন জামাই-শ্বশুর। পরিবারের দাবি, প্রদীপকে আনতে গিয়েছিলেন রূপলাল। তাঁরা দুজন বাড়ি ফিরছিলেন। প্রদীপ নিজের ভ্যানগাড়ি চালাচ্ছিলেন। ভ্যানচোর সন্দেহে তাঁদের খুন করে একদল জনতা।
নিরীহ মানুষদের পিটিয়ে মেরেছে জনতা
মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’র পরিসংখ্যান বলছে, মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরে মাত্র সাত মাসেই বাংলাদেশে গণপিটুনির অন্তত ১১৪টি ঘটনায় ১১৯ জন নিহত। বহু ক্ষেত্রেই চোর-ডাকাত সন্দেহে নিরীহ মানুষদের পিটিয়ে মেরেছে জনতা।