ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যভারত বিরোধিতা তো চলছেই। পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বও চরমে। এবার বাণিজ্য ক্ষেত্রেও ভারত থেকে সরছে বাংলাদেশ। যে ভারত দেশটিকে তৈরি করতে সাহায্য করেছিল, সেই ভারতকে এখন উপেক্ষা করে অকৃতজ্ঞতার নিদর্শন হয়ে উঠছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। যার নির্যাস, কাঁচা তুলো আমদানির জন্য ভারত থেকে সরে ব্রাজিলের সঙ্গে চুক্তি করছে বাংলাদেশ। এতদিন বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পে সবচেয়ে বেশি তুলো রফতানি করত ভারত।
ভারত থেকেই সবচেয়ে বেশি তুলো কিনত বাংলাদেশ
বিশ্বে বস্ত্রশিল্পে বিরাট চাহিদা বাংলাদেশের। চিনের পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বস্ত্র রফাতানি দেশ বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার পর থেকেই বস্ত্রশিল্পকে আলাদা করে জোর দেওয়া হয়। এবং অচিরেই বস্ত্রশিল্পে বিশ্বে একাধিপত্য হয়ে উঠতে শুরু করে বাংলাদেশ। বিশ্বের বহু বড় ও নামী ব্র্যান্ড বাংলাদেশের থেকেই বস্ত্র আমদানি করে ও নিজেদের ট্যাগ দিয়ে তা বাজারে বিক্রি করে। এই শিল্পে কাঁচা তুলোর যে চাহিদা, তা এতদিন মেটাতো ভারতই। ভারত থেকেই সবচেয়ে বেশি তুলো কিনত বাংলাদেশ।
ভারত থেকে বাণিজ্য ক্ষেত্রকেও সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ
ইউনূস সরকারের আসার পর বাংলাদেশে ভারত বিরোধী হাওয়া চরমে পৌঁছেছে। কট্টরপন্থী জামাত ই ইসলামিদের দাপট বেড়েছে। পাকিস্তানের জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে, যে পাকিস্তান একদা খুন,ধর্ষণ করেছিল, সেই পাকিস্তানের মদতেই এখন ভারত থেকে বাণিজ্য ক্ষেত্রকেও সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ।
তুলো আমদানির ক্ষেত্রে ভারতকে ছাপিয়ে গিয়েছে ব্রাজিল
আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের কাঁচা তুলো আমদানির ক্ষেত্রে ভারতকে ছাপিয়ে গিয়েছে ব্রাজিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। ২০২৪-২০২৫ আর্থিক বছরের হিসেবেও দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে মোট তুলো আমদানির ৮২ শতাংশই ভারত থেকে গিয়েছে। এবার ধীরে ধীরে তা কমছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের জুলাইম মাসের রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের রফতানি শিল্পের ৮০ শতাংশই হল রেডিমেড পোশাক। বাংলাদেশের GDP-র ১০ শতাংশ আসে বস্ত্রশিল্প ক্ষেত্র থেকে। ৪০ লক্ষ মানুষের রুজিরুটি। ২০২৪-২৫ বছরে (অগাস্ট ২০২৪–জুলাই ২০২৫) বাংলাদেশ রেকর্ড ৮.২৮ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি করেছে। এর মধ্যে ব্রাজিল সরবরাহ করেছে ১.৯ মিলিয়ন বেল, যা মোট আমদানির ২৫ শতাংশ। আর ভারত দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে, ভারতের সরবরাহ ছিল ১.৪ মিলিয়ন বেল (১৫ শতাংশ)।