বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের একের পর এক ঘটনা ঘটলেও তা স্বীকার করতে রাজি নয় মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। বরং ভারতেই দোষারোপ করছে তারা। শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর তিন মাস পরেও ইউনূস সরকার বাংলাদেশকে স্থিতিশীল করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে ভারতকেই কাঠগড়ায় তুলছে বাংলাদেশের নতুন সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত। তারা দেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ এই নাহিদ ইসলাম। কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরেই পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। শেখ হাসিনা চলে আসেন ভারতে। সেই নাহিদের বক্তব্য,'বাংলাদেশ তথা মুসলিম বিরোধী বক্তব্যকে উস্কানি দিলে তা ভারতের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী'।
এক্স হ্যান্ডেলে নাহিদ লিখেছেন, 'ভারতের শাসক শ্রেণি বিভাজনের রাজনীতি ও বাংলাদেশ-বিরোধী বক্তব্যে লিপ্ত। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও অসমের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের সময় কলকাতা ও দিল্লির পড়ুয়ারা সমর্থন দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার নৃশংসতার প্রতিবাদ করেছিলেন'। নাহিদের দাবি,'ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলি এমন গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি চায় না'।
ছাত্র আন্দোলনের সময় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর একের পর এক হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। হামলা চালানো হয়েছে মন্দিরেও। দিন কয়েক আগে গ্রেফতার করা হয়েছে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ। নাহিদের যুক্তি,'সংখ্যালঘুদের নিপীড়নের মিথ্যে গল্প ব্যবহার করে ভারত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে চাইছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাদানের চেষ্টা করছে'।
নাহিদ ইসলামের অভিমত,'আওয়ামি লিগের চোখে বাংলাদেশকে দেখবেন না। আওয়ামি লিগের আমলেই সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার। তবুও ভারত আওয়ামি লিগকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছে। ভারত নিজেদের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনকারী দলকে আশ্রয় দিয়েছে'। তিনি যোগ করেছেন,'এটা ভুললে চলবে না যে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতার সঙ্গে ভারতের অখণ্ডতাও জড়িয়ে রয়েছে'।