ঐতিহাসিক পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করে বাংলাদেশের যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজে প্রথম গাড়িতে সেতুতে উঠলেন টোল প্লাজায় টোল দিয়ে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার আশা, পদ্মা সেতুর হাত ধরে বাংলাদেশে উন্নয়নের জোয়ার আসবে। বদলে যাবে বাংলাদেশ। বক্তব্যের সময় আবেগে গলা বুজে আসে প্রধানমন্ত্রীর। দেশ-বিদেশের যত বাংলাদেশি রয়েছেন, প্রত্যেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসানের কথা ভেবে। সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেটের উন্মোচন করেন তিনি।
ঐতিহাসিক ক্ষণকে সাক্ষী রেখে উৎসব
দুপুর ১২টায় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে অনুষ্ঠানের পর মাওয়া প্রান্তে সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমেই খুলে গেল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সংযোগ। সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর দুই প্রান্তে শুরু হয়েছে উৎসব। অনুষ্ঠান শুরু হয় দুপুর ১২ টায়। কিন্তু প্রায় মাঝরাত থেকেই হাজির হতে শুরু করেন সে দেশের জনতা।
উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রীর গলায় ষড়যন্ত্রের সুর
বেলা ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়ার সুধী সমাবেশে এসে পৌঁছান। শুরু হয় সভায়। তিনি ছিলেন এ সমাবেশের প্রধান অতিথি। সমাবেশের সভাপতি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তাঁর বক্তব্যের পরই তুমুল হর্ষধ্বনীর মাধ্যমে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শুরুতেই দেশের মানুষের প্রতি তাঁকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। এ সেতু নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
হাসিনার গলায় কবি সুকান্তের পংক্তি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্তম্ভ যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের একেকটি স্তম্ভ।’ শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাবাস বাংলাদেশ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে–পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়।’
ডাকটিকিট ও স্যুভেনিয়র
এদিন সমাবেশে যোগ দিয়ে বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে মাওয়া পয়েন্টে ১০০ টাকার স্মারক নোট উদ্বোধন, স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরিয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। পরে জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা।
এরপর মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত জনসমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।