বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে সংকট দেখা দিয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা আবারও রাজপথে নেমেছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিনের অপসারণ দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন যে দাবি করেছেন তা বাংলাদেশে সাংবিধানিক সংকট তৈরি করেছে। রাষ্ট্রপতি যা বলেছেন সেই অনুসারে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার অসাংবিধানিক।
কী বলেছেন রাষ্ট্রপতি?
গত সপ্তাহে বাংলা দৈনিক মানব জমিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন বলেছিলেন যে 'তার কাছে এমন কোন প্রামাণ্য প্রমাণ নেই যে অগাস্টে বিক্ষোভের মধ্যে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।' অনেক চেষ্টা করেও কোনো দলিল খুঁজে পাননি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। শাহাবুদ্দিন বলেন, 'হয়তো তাঁর (হাসিনার) সময় ছিল না।'
শেখ হাসিনা এখনো দেশের প্রধানমন্ত্রী?
রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যের পর বাংলাদেশে শেখ হাসিনা এখনও প্রধানমন্ত্রী কি না তা নিয়ে আলোচনা জোরদার হয়েছে। গত অগাস্টে একই দাবি করেছিলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সজীব বলেছিলেন যে তার মা পদত্যাগ করেননি এবং তিনি এখনও দেশের প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতির বক্তব্যও যদি সত্য হয় তাহলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর ৮ অগাস্ট বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। শাহাবুদ্দিন বলেছেন যে ৮ অগাস্ট ইউনূস ও তার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের শপথ নেওয়ার আগে তিনি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছিলেন, যা তাকে পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আরও এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল।
রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবি
রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর বাংলাদেশে শেখ হাসিনা বিরোধী গোষ্ঠী উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনরত একদল ছাত্র কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে সমাবেশ করে শাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করে। বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী একজন নেতা রাষ্ট্রপতিকে ফ্যাসিবাদের মিত্র বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি গণহত্যার পক্ষে ছিলেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি। রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় শাহাবুদ্দিনকে অপরাধী বলে আখ্যা দেন দলের এক শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, শাহাবুদ্দিনকে খুনি হাসিনা অবৈধভাবে নিয়োগ করেছেন। বিরোধী ছাত্রনেতা বলেন, 'আমরা তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে বঙ্গভবন খালি করার অনুরোধ করছি। অন্যথায় আমরা জুলাইয়ের মতো আরেকটি আন্দোলন শুরু করব।'