চাকরি ছাড়তে বাধ্য করে দিপু দাসকে উত্তেজিত জনতার কাছে তুলে দেওয়া হয়: র্যাবশনিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরিফ ওসমান হাদিকে কবর দেওয়া হয়েছে। হাদির দল মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। সরকার ওসমান হাদির হত্যাকারীদের ধরতে কী করেছে? এই বিষয়ে রিপোর্ট জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে। এর আগে, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকায় হাদির শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়, যার জন্য বিপুল সংখ্যক মানুষ সমবেত হন। সংগঠনটি শনিবার শাহবাগে দুই থেকে তিন ঘন্টা দীর্ঘ বিক্ষোভ করে এবং দুটি প্রধান দাবি তুলে ধরে।
বিক্ষোভের প্রধান দাবিসমূহ
শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ফোরাম ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরকারের কাছ থেকে মামলার অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট দাবি করেছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছে যে যদি এই রিপোর্ট না দেওয়া হয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর পদত্যাগ দাবি করা হবে। এদিরে রবিবারও ঢাকার কয়েকটি অংশে বিক্ষোভ অব্য়াহত রয়েছে।
দিপু দাসকে নিয়ে পুলিশের বয়ান
ময়মনসিংহের ভালুকায় পিটিয়ে মেরে ফেলা পোশাক কারখানার শ্রমিক দীপুচন্দ্র দাসকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করার পর উত্তেজিত জনতার কাছে তুলে দেন কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ। পরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর মরদেহে আগুন দেওয়া হয়। ময়মনসিংহে ব়্যাবের সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। এ ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও ভিডিও দেখে পৃথকভাবে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও পুলিশ। এর মধ্যে র্যাব সাতজনকে এবং পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নবিকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার রাতে পাইওনিয়ার্স নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার কর্মী দীপুচন্দ্র দাসকে কারখানা থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর গাছে বিবস্ত্র করে ঝুলিয়ে মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহত দিপুর ছোট ভাই শুক্রবার ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। র্যাব–১৪ ময়মনসিংহের অধিনায়ক নয়মুল হাসান বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত হয় সেদিন (বৃহস্পতিবার) বিকেল চারটার দিকে। কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ তাঁকে (দিপু) চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে উত্তেজিত জনতার কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশের কাছে কেন হস্তান্তর করেনি এবং তাঁর নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করা হয়নি, সে কারণে কারখানার সংশ্লিষ্ট দুই কর্মীকে আমরা গ্রেফতার করেছি।’ র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ধর্ম অবমাননার বিষয়টি খুবই অস্পষ্ট। তিনি কী বলেছেন, এটি খোঁজার চেষ্টা করলেও কেউ এটি বলতে পারেনি। কারও সঙ্গে পূর্বশত্রুতা ছিল কি না, সেটি আমরা তদন্ত করে দেখব। ঘটনার সূত্রপাত কার সঙ্গে হয়েছে, সেটি শনাক্ত করা যায়নি। আমরা জানতে পেরেছি, কাজ করার সময় ফ্লোরেই বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয় এবং তাঁকে কোনওভাবেই আর কারখানার ভেতরে রাখা যাচ্ছিল না। ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা আসামিদের ধরেছি। কী কারণে ঘটনা ঘটেছে, তা উদ্ঘাটন ও জড়িত সবাইকে ধরতে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।’