শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়দান২০২৪ সালের জুলাই মাসে যে হিংসাত্মক আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশে, সেই তথাকথিত গণঅভ্যুত্থানে মানবতা বিরোধী অপরাধে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়দান পর্ব চলছে আজ। গোটা বাংলাদেশে উত্তপ্ত পরিস্থিতি এই ঘটনাকে ঘিরে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশজুড়ে কমপ্লিট শাটডাউনের ডাক দিয়েছে হাসিনার দল আওয়ামী লিগ। গণ অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ড সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় আজ। ষড়যন্ত্র করে হাসিনা সরকারের পতন ঘটানো হয়েছিল ২০২৪ সালে অগাস্টে। এবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় দিচ্ছে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এঁদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই তপ্ত পরিস্থিতি ঢাকা সহ গোটা বাংলাদেশে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি সূত্রের খবর, রবিবার রাতেও ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ, বাস ও দোকানে আগুন ধরানোর খবর পাওয়া গিয়েছে। রাতভর মশাল মিছিল হয়েছে। ইউনূস সরকারের একজন উপদেষ্টার বাসভবনের সামনেও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিক্ষোভে জড়িতদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট মাসে হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ, নিরস্ত্র দেড় হাজার ছাত্র জনতাকে হত্যা এবং ৩০ হাজার মানুষকে আহত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছিল বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)।
ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে ২০২৪ সালের আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও আসছেন। ১৫টি পরিবার রায়দানের সময় ১৫টি পরিবার উপস্থিত থাকবেন এজলাসে।
মানবতা বিরোধী অপরাধে রায়দানের আগে শেখ হাসিনা বড় বার্তা দিলেন। একটি অডিও বার্তায় আওয়ামী লিগ সমর্থকদের হাসিনা বললেন, 'আমার কিছু যায় আসে না। আল্লাহ আমায় জীবন দিয়েছেন।' বস্তুত, হাসিনাকে যে মৃত্যুদণ্ডই দেওয়া হবে, তা মোটামুটি নিশ্চিত। হাসিনার ছেলে জয়ও সেরকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
রাষ্ট্র সংঘের মানবাধিকার দফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৫ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্টের মধ্যে বাংলাদেশে অশান্তিতে আনুমানিক ১,৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বিষয়ে ট্রাইবুনাল কী জানায়, সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।
বাংলাদেশে একাধিক রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে আওয়ামী লিগের সমর্থকরা। দেশজুড়ে সম্পূর্ণ শাটডাউন ঘোষণা করেছে আওয়ামী লিগ। বড় বড় গাছ ফেলে রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে বহু জায়গায়।
Ahead of the verdict in the case filed against Former Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina, violence is being reported in various parts of Bangladesh. There have been incidents of car arson, cocktail explosions and road blockades across the country.
— ANI (@ANI) November 16, 2025
The government has… pic.twitter.com/udTjDbS97X
শেখ হাসিনার ছেলে জয় জানিয়েছেন, 'ভারতে তাঁর মা নিরাপদ। রায় কী হতে চলেছে, আমরা সকলেই তো জানি। সরাসরি সম্প্রচারও করা হবে। মাকে দোষী সাব্যস্ত করবে ওরা। হয়তো মৃত্যুদণ্ডই দেবে। কিন্তু ওরা আমার মায়ের সঙ্গে কী করতে পারে? মা ভারতে নিরাপদে রয়েছেন। ভারত সরকার তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।'
ঢাকার রাস্তা প্রায় শুনশান। গাড়ি চলাচল অত্যন্ত কম। সেনা ও র্যাব নামানো হয়েছে। কড়া নিরাপত্তা রাখা হয়েছে শাহবাগ চত্বরে।

ঢাকার আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়দান লাইভ সম্প্রচার করবে। BTV সহ বাংলাদেশের সব নিউজ চ্যানেলে দেখানো হবে রায়দান পর্ব। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়দান সোমবার। উস্কানিমূলক মন্তব্য, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুরে ছাত্র হত্যা, রাজধানীর চাঁনখারপুলে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মতো ৫ গুরুতর অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লিগকে ষড়যন্ত্র করে নিষিদ্ধ করেও ভয়ে কাঁপছে ইউনূস সরকার। যার নির্যাস, আজ সকালে ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সহ (এপিবিএন) সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। এর মধ্যে সেনাবাহিনী সাঁজোয়া গাড়িও রয়েছে। সব মিলিয়ে ঢাকা সহ গোটা বাংলাদেশে বলা যেতে পারে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লিগের বিক্ষোভে পরিস্থিতি হিংসাত্মক রূপ নিচ্ছে কক্সবাজারে। দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনার খবর আসছে। আওয়ামী লিগের দাবি, প্রতিহিংসার রাজনীতিতে শেখ হাসিনাকে পরিকল্পিত ভাবে খুনের জন্য মরিয়া মহম্মদ ইউনূস। বিশ্বের মানবাধিকারি সংগঠনগুলি উদ্বেগ জানিয়েছে।
The Sham Trial of Sheikh Hasina: Political Revenge Under the Guise of Justice
— Bangladesh Awami League (@albd1971) November 16, 2025
------
A growing number of observers, legal experts, and human rights advocates are raising serious concerns about the ongoing case against former Prime Minister Sheikh Hasina. Many are calling it less… pic.twitter.com/0ECcVyHzpY
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসিকিউটর গাজি মোনাওয়ার বলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের সাজা হলে তাঁরা আপিল করতে পারবেন না। কারণ তাঁরা পলাতক। ট্রাইব্যুনাল আইনে পরিষ্কার বলা আছে, রায় দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। তবে আপিলের সুযোগ নিতে হলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আত্মসমর্পণ করতে হয়। অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি গ্রেফতার করতে পারে, তাহলেও আপিলের সুযোগ পান আসামি।
সকাল ১০.৩০ মিনিটে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়দান করবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। তার আগেই বাংলাদেশ উত্তেজনা চরমে উঠেছে। একাধিক জায়গায় আগুন লাগানো হয়েছে। যার ফলে ঢাকা এবং অন্যান্য শহরে চরম নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে।
সোমবার ভারতীয় সময় বেলা সাড়ে ১০টায় ঘোষণা করার কথা ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১-এর। ট্রাইবুনাল তথা সুপ্রিম কোর্ট সহ রাজধানী ঢাকা ও গোটা দেশে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। দু’দিনের শাটডাউন (হরতাল) কর্মসূচি পালন করছে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লিগ।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়দানের আগে থেকেই গোটা বাংলাদেশে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। দেশজুড়ে কমপ্লিট শাটডাউনের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লিগ।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড চাইছে ইউনূস সরকার। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় হতে চলেছে আজ।