বাংলাদেশ আফগানিস্থান হয়ে যাবে না। আশ্বাস দিলেন মহম্মদ ইউনূস। হাসিনা-হীন বাংলাদেশে চূড়ান্ত অরাজকতা চলছে। এমন পরিস্থিতি অনেকেই এর সঙ্গে তালিবানি আফগানিস্থানের তুলনা করছেন। এমনই প্রেক্ষাপটে নয়া বার্তা দিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। তিনি জানান, এমন সব ধারণা বাদ দিতে হবে ভারতকে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে উন্নত করার আহ্বান জানিয়েছেন ইউনূস।
মহম্মদ ইউনূস বলেন, 'বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণে সাম্প্রদায়িকতার চেয়েও রাজনৈতিক কারণই বেশি।' ভারত এই আক্রমণের ঘটনাগুলিতে সেদেশের হিন্দুদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আর সেখানেই আপত্তি ইউনূসের।
তাঁর কথায়, 'এই আক্রমণগুলি রাজনৈতিক প্রকৃতির... সাম্প্রদায়িক নয়। ভারত এই ঘটনাগুলির খুব প্রচার করছে। আমরা কখনই বলিনি যে আমরা কিছু করতে পারব না; আমরা বারবার বলেছি যে আমরা সবরকম চেষ্টা করছি,' এক সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে এমনটা জানিয়েছে মহম্মদ ইউনূস।
হিন্দুদের উপর হামলার একাধিক ঘটনা যদিও অজানা নয়। হিন্দুদের ব্যবসা ও সম্পত্তি ভাঙচুর এবং হিন্দু মন্দির ধ্বংসের মতো ঘটনা ঘটেছে। ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের আসার পর হিংসার ঘটনা চরমে ওঠে।
ইউনূসের মতে, সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়টি 'অতিরিক্ত' করে দেখানো হচ্ছে। এই ঘটনাগুলি সাম্প্রদায়িক হিংসা নয়, বরং রাজনৈতিক উত্থানের ফলে হয়েছে।
নোবেল-জয়ী বলেন, 'একটা ছবি তৈরি করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে বাংলাদেশে সবাই ইসলামপন্থী, বিএনপি ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী। এই দেশকে আফগানিস্তানে পরিণত করবে। আর বলা হচ্ছে খালি শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে। ভারতকে এই আখ্যান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।'
ইউনূস ভারতের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক শোধরানোর জন্য বৃহত্তর সহযোগিতার আহ্বান জানান। 'আমাদের এই সম্পর্ক উন্নত করতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে,' বলেন তিনি।
সামরিক-সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকার এর আগে ভারতের কাছে শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের দাবি করেছিল।
এদিন ইউনূস ফের বলেন, 'যদি বাংলাদেশ (সরকার) ফেরত না চাওয়া পর্যন্ত ভারত তাঁকে রাখতে চায়, সেক্ষেত্রে একটাই শর্ত, চুপ করে থাকতে হবে।'
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।, ভারত বাংলাদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউনূসের মন্তব্য তাই আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেও বাংলাদেশের কথা বলেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যাতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তিনি বলেন ১৪০ কোটি ভারতীয় প্রতিবেশী দেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।