কলকাতায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণের হুমকি দিলেন বাংলাদেশের ধর্মগুরু মৌলানা আবদুল কুদ্দুস ফারুকি। তাঁর মতে, যুদ্ধবিমানের প্রয়োজন নেই, প্রকৃত অর্থে হামলা হতে পারে আত্মঘাতী বিস্ফোরণেই। তিনি বলেন, 'তালিবানি ট্যাকটিক অনুযায়ী আত্মঘাতী বিস্ফোরণই সবচেয়ে সফল পথ। আমেরিকা এবং সোভিয়েত রাশিয়ার মতো সুপার পাওয়ারের বিরুদ্ধে এই পথই অবলম্বন করেছিল তালিবান।'
গত ৮ মার্চ এই ভিডিওটি পাবলিশ করা হয় হাসান মিডিয়া নামে একটি বাংলাদেশি ইউটিউব চ্যানেল থেকে। যেখানে ধর্মগুরু মৌলানা আবদুল কুদ্দুস ফারুকিকে বলতে শোনা যায়, 'বাংলাদেশি সেনা যদি আমায় বলে, যাও কলকাতা দখল করো, আমি একটা প্ল্যান তৈরি করব। ৭০টি যুদ্ধবিমানের কথা ভুলে যান। কলকাতা দখল করতে আমার ৭টা বিমানেরও প্রয়োজন পড়বে না। কেন ৭০টা বিমান লাগবে? আমি কলকাতায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ করাব।'
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা পরিস্থিতিতে ওই ভিডিওটির একটি ১১ মিনিটের ক্লিপিং ভাইরাল হয়েছে। বাংলাদেশি হিন্দুত্ববাদী সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলি থেকে শেয়ার করা হয়েছে ধর্মগুরুর ভিডিওর ওই অংশটি। হাসান মিডিয়া ইউটিউব চ্যানেল থেকে পোস্ট করা সম্পূর্ণ ভিডিওতে এখনও পর্যন্ত ১.৩ লক্ষ ভিউস রয়েছে। ওই চ্যানেলে সাধারণত যে ভিডিওগুলি পোস্ট করা হয় তার চেয়ে ১৩০ গুণ বেশি শেয়ার হয়েছে ধর্মগুরু মৌলানা আবদুল কুদ্দুস ফারুকির ভিডিওটি। ৯০ গুণ বেশি লাইক পড়েছে সেটিতে, ৬০০-র বেশি কমেন্ট পড়েছে। গত ৬৬ দিন ধরে চ্যানেলটিতে রয়েছে ভিডিওটি। প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৯৮১ ভিউস, ৪২টি লাইক এবং ২৭টি করে কমেন্ট পড়ছে। এমনটাই হিসেব কষে জানিয়েছে ইউটিউবের লেনোস্টিউব প্ল্যাটফর্মটি।
ধর্মগুরু মৌলানা আবদুল কুদ্দুস ফারুকিকে আরও বলতে শোনা যায়, 'বাংলাদেশি সেনা অনুমতি দিলে কলকাতায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটাব। এর অর্থ কী জানেন? ইসলামের আয়াত অনুযায়ী, মেরে মরো। আরও একটি জিনিস আমি শিখেছি। নিজের জীবন বলিদান দিয়ে কাফিরদের হত্যা করো।'
কী কী উপায়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব তাও জানিয়েছেন এই বাংলাদেশি ধর্মগুরু। তালিবানরা বাইকে বিস্ফোরক বেঁধে তা চালিয়ে দিত সেনা ছাউনিতে। বাইক চালককে গুলি করা হত, কিন্তু সেই একটি গুলিতে কারও মৃত্যু সম্ভব নয় বলে দাবি করেন এই ধর্মগুরু। ততক্ষণে চালক সেনা ঘাঁটিতে বাইকে নিয়ে ঢুকে পড়তেন আর বিস্ফোরণে সব শুদ্ধ উড়ে যেত। এভাবেই প্রায় ৩০০ মার্কিন সেনাকে হত্যা করেছে তালিবানরা, দাবি ধর্মগুরুর। ধর্মগুরু মৌলানা আবদুল কুদ্দুস ফারুকি বলেন, 'এতে কী হত জানেন? মুসলিম বাইক চালক হয়ত মারা যেতেন কিন্তু তিনি কতগুলো কাফেরকে মেরে যেতেন।'
ফেসবুকেও অ্যাকাউন্ট রয়েছে ওপার বাংলার এই ধর্মগুরুর। প্রোফাইলের নাম 'আল্লামা আবদুল কুদ্দুস ফারুকি'। সেখানেও একাধিক ভিডিও রয়েছে তাঁর। যেখানে তাঁকে হিন্দু বিরোধী মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ভাইরাল হওয়া ১১ মিনিটের ভিডিওতে ধর্মগুরু মৌলানা আবদুল কুদ্দুস ফারুকি বলেছেন, 'ওরা নোংরা জিনিস খায়। মূত্র, গোবর, কচ্ছপ খায়। ওরা বোঝেও কম। শারীরিক ভাবেও খুব দুর্বল। এগুলো না জানলে আপনি মুসলিম কমান্ডার হতে পারবেন না। বুঝতে পারলেন? জানেন ওরা রক্ত দেখলে কত ভয় পায়। মূর্তি পুজো করে যারা, তারা এমনই ভীতু হয়।'