সারেগামাপা-এর মঞ্চ থেকে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন বাংলাদেশের গায়ক মইনুল আহসান নোবেল। তাঁর গানের প্রশংসা করেছিলেন তাবড় তাবড় গায়ক-সঙ্গীত পরিচালকেরা। কিন্তু এরপরই একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন নোবেল। তাঁর গানের চেয়ে বেশি নোবেল তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েই বেশি আলোচনায় থাকতেন। কখনও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে মন্তব্য করে আবার কখনও বা মাদক কাণ্ডে জড়িয়ে আবার কখনও বা নারী আসক্তি। এইসব বিভিন্ন বিষয় নিয়েই বিতর্কের শীর্ষে থাকতেন গায়ক নোবেল। যে কারণে, একগুচ্ছ কাজও হারিয়েছেন নোবেল। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধ একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন গায়কের স্ত্রীও।
নেশা করে মঞ্চে উঠে গান গাইতে ওঠার অভিযোগ তুলেছিল বাংলাদেশেরই একটি ক্লাব। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে নোবেলের নিন্দায় সরব হন তাঁরই ভক্ত-অনুগামীরা। মাদকাসক্ত’ তকমা পেয়ে যান একসময়ের সকলের চোখের মণি। তবে তিনি যে এক আসক্তিতে ছিলেন, তা বলা বাহুল্য। তার অনুরাগীদের প্রার্থনা ছিল শুধু তার সুস্থতা কামনায়। কারণ, নোবেল সুস্থ হয়ে ফিরে এলেই আবার শোনা যাবে তার সেই ঝাঁজালো স্বরের গান। দীর্ঘদিন রিহ্যাবে ছিলেন নোবেল। আর সেখান থেকে ফিরেই নিজেকে বদলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন গায়ক।
একাধিক বাংলাদেশী সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে নোবেল তাঁর ভুল স্বীকার করেছেন। নিজের ইচ্ছাতেই যে রিহ্যাবে গিয়েছিলেন সে কথাও জানিয়েছেন গায়ক। নোবেল জানান, নিজেকে শোধরানোর জন্য তাঁকে রিহ্যাবেও কাটাতে হয়েছে। নোবেল বলেন, একটা আসক্তিতে পড়ে যাই। আমার সম্মতি সাপেক্ষেই আমি রিহ্যাবে কাটিয়েছি। এখন আমি এগুলো থেকে বিরত আছি, সম্পূর্ণরূপে বিরত। সেই জগতে আমার আর ফিরে যাওয়ারও ইচ্ছে নেই। এখানে কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই, সবকিছুর জন্য আমিই দায়ী। নোবেলও এও বলেন, অনেকের থেকে দূরে সরে যাওয়ায় একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। আমার কিছু কার্যকলাপ, সেসব ভুল ছিল। সবমিলিয়ে আমার আচার-আচরণ একটু অন্যরকম হয়ে গিয়েছিল। ইন্ডাস্ট্রিতে যারা মূলত আমাকে দিয়ে কাজ করাবেন, তাদের সঙ্গেও আমার একটা দূরত্ব তৈরি হয়, ভুল-বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়। এর ফলেই আমি ‘গায়েব’ হয়ে যাই।
নোবেল স্বীকার করে নেন যে তাঁর কাছে শ্রোতাদের যে প্রত্যাশা ছিল সেই অনুযায়ী তিনি চলতে পারেননি। তাঁকে মানুষ চিনেছেন তাঁর গানের মাধ্যমে। তবে নোবেল জানান এবার থেকে তিনি এইসব কিছু থেকে দূরে থাকার চেষ্ট করবেন। বর্তমানে নোবেলের হাতে কিছু গান ও সিনেমা রয়েছে, যা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্মাণ হবে। এর মধ্যে একটিতে নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে তাঁকে। পর্দায় নেগেটিভ চরিত্র নিয়েই ফিরতে চান এই গায়ক।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে রিহ্যাবে রয়েছেন নোবেল। অতিরিক্ত মাদক আসক্তির জন্যই রিহ্যাবে যেতে হয়েছিল তাঁকে। নোবেলের প্রাক্তন স্ত্রী সালসাবিল অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে পথে আনতে পারেননি। ফেসবুকের পাতায়ই স্বামী নোবেলের বিরুদ্ধে উগরে দিয়েছিলেন একগুচ্ছ অভিযোগ। স্ত্রীয়ের উপর শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এমন কোনও ঘটনারই আর পুনরাবৃত্তি হবে না বলে জানিয়েছেন গায়ক।