Dhaka Shooting: ইউনূসদের কত ঘেন্না ভারত নিয়ে? গুলি কাণ্ডে দ্বিচারিতায় ফাঁস

Dhaka Shooting: জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরদিনই ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি। রাজধানীর ব্যস্ত এলাকায় শুক্রবার দুপুরে বাইক আরোহী হামলাকারীর এলোপাথাড়ি গুলিতে গুরুতর জখম হন শরিফ ওসমান হাদি। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি এখন কোমায়।

Advertisement
ইউনূসদের কত ঘেন্না ভারত নিয়ে? গুলি কাণ্ডে দ্বিচারিতায় ফাঁসঢাকা পুলিশের বক্তব্য এবং সরকারের কূটনৈতিক অবস্থানের মধ্যে এই বিস্তর ফারাক কেন্দ্র করেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
হাইলাইটস
  • জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরদিনই ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি।
  • গুলি-কাণ্ডের অভিঘাত কাটতে না কাটতেই রবিবার ভারতের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক তরজা শুরু করে দেয় মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার।
  • এখনও পর্যন্ত হামলাকারীদের সীমান্ত পার হওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি।

Dhaka Shooting: জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরদিনই ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি। রাজধানীর ব্যস্ত এলাকায় শুক্রবার দুপুরে বাইক আরোহী হামলাকারীর এলোপাথাড়ি গুলিতে গুরুতর জখম হন শরিফ ওসমান হাদি(Sharif Osman Hadi)। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি এখন কোমায়। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাদি। আরও ভাল চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এই গুলি-কাণ্ডের অভিঘাত কাটতে না কাটতেই রবিবার ভারতের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক তরজা শুরু করে দেয় মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশ সরকার। জানায়, যদি হামলাকারীরা ভারতে ঢুকে থাকে, তা হলে তাদের গ্রেফতার করে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। যদিও সেই দিনই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়ে দেয়, এখনও পর্যন্ত হামলাকারীদের সীমান্ত পার হওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি।

ঢাকা পুলিশের এই বক্তব্য এবং সরকারের কূটনৈতিক অবস্থানের মধ্যে এই বিস্তর ফারাক কেন্দ্র করেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মহম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গোয়েন্দা বিভাগ-সহ একাধিক তদন্তকারী দল বিভিন্ন সূত্র ধরে এগোচ্ছে। কিন্তু তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, এই মুহূর্তে অভিযুক্তদের দেশত্যাগের কোনও নিশ্চিত তথ্য তাঁদের হাতে নেই।

তা হলে কেন এত তাড়াতাড়ি ভারতের দিকে আঙুল তোলা হল?
এই প্রশ্নের উত্তর একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট। কাতার-প্রবাসী এক বাংলাদেশি সাংবাদিক ফেসবুকে দাবি করেন, হামলায় যুক্ত দু’জন ব্যক্তি ১২ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকেছে। বর্তমানে অসমের গুয়াহাটিতে রয়েছে। ওই পোস্টে অভিযুক্তদের নাম, রাজনৈতিক ইতিহাস এমনকি একটি ভারতীয় মোবাইল নম্বরের কথাও উল্লেখ করা হয়। যদিও সেই দাবি সরকারি ভাবে যাচাই করা হয়নি।

এই সেই পোস্ট।
এই সেই পোস্ট।

এরপরেও শুধুমাত্র একটি পোস্টের ভিত্তিতেই উত্তেজনা ছড়ায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। কারণ, যাঁদের নাম উঠে এসেছে, তাঁদের একজন ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেতা বলে দাবি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইউনূস প্রশাসনের আমলে আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে হামলার সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠনের যোগের অভিযোগ গোটা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

Advertisement

ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ডেকে পাঠানো
এই আবহেই রবিবার ঢাকার বিদেশ মন্ত্রকে ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ডেকে পাঠানো হয়। শুধু হামলাকারীদের প্রসঙ্গ নয়, বৈঠকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। ঢাকার অভিযোগ, ভারতে থেকে শেখ হাসিনা এমন সব মন্তব্য করছেন, যা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে এবং দেশে অস্থিরতা বাড়াতে পারে।

এই অভিযোগ অবশ্য সরাসরি খারিজ করেছে নয়াদিল্লি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানায়, ভারত কখনওই বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কোনও কাজের জন্য নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেয়নি।  

বাস্তব পরিস্থিতি কিন্তু যথেষ্ট উদ্বেগজনক। গত কয়েক মাসে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা বেড়েছে। কখনও রাজনৈতিক নেতাদের উপর হামলা, কখনও প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ, সব মিলিয়ে অস্থিরতার ছবি স্পষ্ট। সম্প্রতি ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সদর দফতরের বাইরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।

বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই দেশে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন
বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনও দেশের বাইরে। তাঁর দাবি, ‘নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতি’র কারণে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, নিরাপত্তা-সংক্রান্ত আশঙ্কাই এর মূল কারণ।

এহেন প্রেক্ষাপটে হাসিনা-বিরোধী শরিফ ওসমান হাদির উপর হামলা নিছকই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ঢাকার একাংশের মতে, ভোটের ঠিক আগে প্রকাশ্য দিবালোকে এই ধরনের আক্রমণ গোটা রাজনৈতিক পরিসরে ভয় এবং অনিশ্চয়তার বার্তা দেয়। এ 

হাদি নিজে বরাবরই কট্টর ভারত-বিরোধী এবং আওয়ামি লিগ-বিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত। ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র হিসেবে তিনি বহুবার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। এমনকি তাঁর ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’-এর মানচিত্র প্রকাশ করে ভারতের অংশ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি নিয়েও শোরগোল হয়েছিল। ঢাকা-৮ কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে তিনি সব প্রধান রাজনৈতিক দলকেই আক্রমণ করেছিলেন।

বর্তমানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আর তাঁর উপর হামলা বাংলাদেশের ভঙ্গুর রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। ইউনূস প্রশাসনের সামনে এখন আইনশৃঙ্খলা ফেরানোটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

ঢাকার রাজনীতি ও নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক; দু’দিকেই যে এই গুলি-কাণ্ডের রেশ আরও অনেক দূর পর্যন্ত গড়াবে, তা বলাই বাহুল্য।

POST A COMMENT
Advertisement