শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার ময়মনসিংহে দীপু দাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।-ফাইল ছবিময়মনসিংহে কারখানা শ্রমিক দীপু দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সরকার স্পষ্ট করেছে, এই ঘটনা একটি জঘন্য অপরাধ, যার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। এবং বাংলাদেশি সমাজে এর কোনও স্থান হতে পারে না।
মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার ময়মনসিংহে দীপু দাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের বার্তা পৌঁছে দিয়ে শোকাহত পরিবারকে সরকারের সহানুভূতি জানান। এবং এই কঠিন সময়ে সহায়তার আশ্বাস দেন। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, নিহতের স্ত্রী, তিন বছরের সন্তান ও বৃদ্ধ বাবাকে আর্থিক ও কল্যাণমূলক সহায়তা দেওয়া হবে ।এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগামী দিনগুলোতে পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখবে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ, গুজব বা বিশ্বাসের পার্থক্য কখনওই হিংসার অজুহাত হতে পারে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনও অধিকার কারও নেই। আইনের শাসনের প্রতি সরকারের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলা হয়েছে। অপরাধের তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষমতা একমাত্র রাষ্ট্রের।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ধৃতদের মধ্যে কারখানার কয়েকজন কর্মকর্তাও রয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশে খবর না দিয়ে দীপু দাসকে জনতার হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ধর্ম অবমাননার অভিযোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সরকার নির্দেশ দিয়েছে, এই মামলার তদন্ত সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে ও ব্যতিক্রমহীনভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনের পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করা হবে।
দেশজুড়ে ক্ষোভ এবং আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মধ্যেই সরকারের এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এই হত্যাকাণ্ডকে 'ভয়াবহ' বলে নিন্দা করেছে। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশন ও কলকাতায় ডেপুটি হাই কমিশনের বাইরে প্রতিবাদও হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আবারও স্পষ্ট করেছে, ধর্ম, জাতি বা পটভূমি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সমান সুরক্ষা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য। পাশাপাশি, সকল সম্প্রদায় ও নেতৃত্বকে সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে সংযম, মানবতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।