বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণের জন্য ইতিমধ্যেই ভারতের কাছে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্তের কথা বলেছেন মহম্মদ ইউনূস প্রশাসন। হাসিনাকে আরও বিপাকে ফেলতে আরও কোমর বেঁধে লেগে পড়ল ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। যার নির্যাস, গণহত্যার অভিযোগে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।
একমাস সময় দিল আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল
এই ট্রাইবুনাল গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান। সেই ট্রাইবুনালই এবার হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট একমাসের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল। বাংলাদেশের সংবাদনাধ্যম 'প্রথম আলো'-র খবর অনুযায়ী, শুধু হাসিনাই নন, আওয়ামী লিগের সাংসদ-মন্ত্রী সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে ট্রাইবুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের ট্রাইবুনালের নির্দেশ মতো আগামী ১ মাসের মধ্যে শেখ হাসিনা ও ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
চলতি বছরের জুলাই-অগাস্টে বাংলাদেশে হিংসার ঘটনায় গণহত্যা সহ মানবতাবিরোধী বহু ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ট্রাইবুনালের কাছে দু মাস সময় চায়ন সে দেশের চিফ প্রসিকিউটর মহম্মদ তাজুল ইসলাম। ট্রাইবুনাল জানিয়ে দেয়, দু মাস নয়, আগামী একমাসের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
ভারতে আশ্রিত রয়েছেন হাসিনা
শেখ হাসিনা ভারতে আছেন বলে গত ৬ অগাস্ট লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছিলেন, ‘হাসিনা স্বল্পকালীন নোটিসে ভারতে এসেছে।’ পরে জানা যায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমান হাসিনাকে দিল্লির অদূরে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানবন্দরে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছে।
‘গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ’
কোটা সংস্কার আন্দোলন পর্বে ‘গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি মামলার প্রেক্ষিতে গত ১৭ অক্টোবর হাসিনা, তাঁর দল আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের-সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আইটিসি। দু’টি মামলার মধ্যে একটি কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ছাত্র মহম্মদ মেহেদির বাবা মহম্মদ সানাউল্লাহ দায়ের করেছিলেন। অপরটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত নেতা আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মহম্মদ বুলবুল কবির। শুধু হাসিনা নন, তাঁর সরকারের মন্ত্রী, দল আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন শাখা সংগঠন এবং কয়েক জন সরকারি আধিকারিকের নামেও অভিযোগ করা হয়েছিল।