ইলিশের প্রজনন ভারসাম্য রাখতে এবং বর্ষার মরশুমে বড় ইলিশের যোগান ঠিক রাখতে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুমাস পদ্মা-মেঘনা সহ সমস্ত নদীতে ইলিশ সহ সমস্ত ধরণের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে মাছ ধরলে মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনের তরফে জেল-জরিমানার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু জেলে চোরাপথে ইলিশ ধরতে গিয়ে ধরা পড়ছে। তা সত্ত্বেও কিছুতেই চোরাই ইলিশ ধরা ও পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিশেষ করে ভোলা এলাকা থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ইলিশ সহ নদীর বিভিন্ন মাছ ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বলে অভিযোগ। এমনকী প্রশাসনের একাংশ কর্মীর মদতেই চলছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
সদর উপজেলা ইলিশাঘাট থেকে ট্রাক ভর্তি লক্ষ লক্ষ টাকার ইলিশ ও পোয়া মাছ ভোলার বিভিন্ন ঘাট থেকে কিনে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন ইলিশের কারবারিরা। এ ছাড়াও আরও বহু ইলিশ নজর এড়িয়ে সীমান্ত পেরিয়ে এ রাজ্যেও ঢুকছে বলে খবর। কিছু ইলিশ বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে উত্তর চব্বিশ পরগণা হয়ে কলকাতায় চলে আসছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সে দেশের সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে দেশের পুলিশ ও প্রশাসন।
বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানা গিয়েছে, বরিশাল, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরিয়তপুর ও পটুয়াখালির ইলিশ অভয়াশ্রম সংলগ্ন নদ–নদীতে ইলিশ সহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মার্চ ও এপ্রিল, এই দুই মাস এই সব অঞ্চলে সমস্ত ধরণে ইলিশ ও অন্য মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
যে পাঁচটি এলাকাকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই চাঁদপুর, ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর নিম্ন অববাহিকায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা, ভোলার মদনপুর ও চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত শাহবাজপুর শাখা নদীর ৯০ কিলোমিটার এলাকা, বরিশালের হিজলা, মেদেন্দীগঞ্জ, বরিশাল সদর উপজেলার কালাবদর, গজরিয়া ও মেঘনা নদীর প্রায় ৮২ কিলোমিটার এলাকা, শরিয়তপুরে নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা ও চাঁদপুরের মতলব উপজেলার মধ্যে থাকা পদ্মা নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকা ও ভোলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালি জেলার চর রুস্তম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় বিশেষ নজরদারি রাখার কথা। কিন্তু তেমন হচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে।