ভরা বর্ষা চলছে, আর এটাই হল ইলিশের মরসুম। কিন্তু কলকাতার বাজারে ইলিশ উঠলেও মিলছে না পদ্মার ইলিশ। কলকাতার যে কটি বড় মাছের বাজার রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম গড়িয়াহাট বাজার। এখানে এমনিতেই মানুষের ভিড় থাকে। তবে, ইলিশের মরসুমে সেই ভিড় বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পদ্মার ইলিশ বাজারে ঢুকলেই বিক্রেতাদের কাছে চাহিদার শীর্ষে উঠে আসে। তবে এ বছর এখনো কলকাতায় দেখা নেই পদ্মার ইলিশের। তবে গঙ্গার এপারে পদ্মার ইলিশ অমিল হলেও গত বছরের চাইতে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি মাছ ধরা পড়েছে সীমান্তের ওপারে।
টানা ৬৫ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৩শে জুলাই মধ্যরাত থেকে সমুদ্রে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে জেলেরা বলছেন নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর গত বছর যে পরিমাণ মাছ উঠেছিল এবারে তার চাইতে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি ইলিশ পাচ্ছেন তারা। বেশিরভাগ মাছের আকার বড়, ওজনেও বেশি। রাজধানী ঢাকার রামপুরা বাজার, মেরুল বাড্ডা, মালিবাগ, শান্তিনগর, মগবাজার, সেগুনবাগিচাসহ বেশ কিছু বাজারে মাছের দোকানগুলোতে ইলিশ নিয়েই হৈ চৈ বেশি চোখে পড়েছে। বাজারগুলোতে এটির সরবরাহও যথেষ্ট বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা।
ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে প্রতিবছরের মত এবারও গত ২০ মে থেকে বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। গত ২৩ জুলাই এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। এরপর থেকে ইলিশ ধরতে সাগরে ছোটেন জেলেরা। গত কয়েক দিন ধরে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার খবরও মিলছে। জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাসকে ধরা হয় ইলিশের ভরা মরসুম। এ সময়ে বাজার ইলিশে সয়লাব থাকে। তাই অন্যান্য সময়ের তুলনায় দামও থাকে কম। বিক্রিও হয় বেশি। যথেষ্ট মাছ মেলায় বাংলাদেশ বাজারে ইতিমধ্যে ইলিশের দাম কমছে, জানাচ্ছেন ওপার বাংলার মাছ বিক্রেতারা। ওপার বাংলার মহিপুর, আলীপুর, খালগোড়া, ঢোস, চাড়িপাড়া, গঙ্গামতীতে মাছের আড়তগুলিতে যথেষ্ট ইলিশ উঠছে। মৎস্যজীবীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই বছর ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ইলিশ এই আড়তগুলিতে বিক্রি হচ্ছে ২৪ হাজার ২৫ হাজার টাকা মণ দরে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই পরিমাণ ইলিশ বিক্রি হত ৩২ থেকে ৩৩ হাজার টাকায়। চলতি মরশুমে দেড় থেকে দুই কেজি পাশাপাশি আড়াই কেজির ইলিশও ধরা পড়েছে মৎস্যজীবীদের জালে। মৎস্যজীবীদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় লাভের মুখ দেখছেন মাছ বিক্রিতারাও। একলাফে কমেছে দামও। ২০১১-১২ সালে বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে তিন লাখ ৪৭ হাজার মেট্রিক টন। ২০২০-২১ বছরে এই উৎপাদন একলাফে অনেকটাই বেড়েছে। তা দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন।