মুখে ইউনুস খুব ‘সেকুলার’ শব্দটি ব্যবহার করছেন আর কাজে করছেন তার ঠিক বিপরীত। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে শুধু ঘরবাড়ি জ্বালিয়েই যে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে তা নয়, এবার প্রশাসনিক পদে হিন্দু নিয়োগ কার্যত নিষিদ্ধ হল। বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করা একাধিক হিন্দু চাকরিপ্রার্থীর নাম বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়েছেন সীমান্তের ওপারে জেলবন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। যদিও বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ প্রশাসন কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিস বিসিএসের ফাইনাল লিস্ট প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার। গত ১৫ অক্টোবরের লিস্ট বাতিল করে নতুন লিস্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেখান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ১৬৮ জনকে। এনিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কোনও কোনও মহল থেকে দাবি করা হয়েছে, যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের বেশিরভাগই হিন্দু।
বাংলাদেশের বিসিএস-এ পাস করেও হিন্দু চাকরি প্রার্থীদের নাম বাতিল করে দেওয়া হয়েছে, মঙ্গলবার কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করে এমনটাই দাবি করেছেন প্রাক্তন ইস্কন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তবে অসমর্থিত সূত্রে খবর, যে ১৬৮ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের বেশিরভাগই হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষ। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, ৩ মাসের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি বদল করে বেছে বেছে কেন সনাতনীদের বাদ দেওয়া হল ?
৪৩ তম বি সি এসের যে তালিকা বেরিয়েছে সেই অনুযায়ী, প্রশাসন ক্যাডারে যে ২৬ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৩ জনই হিন্দু। পররাষ্ট্র ক্যাডার, সেখানে যে ৫ জন বাদ পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২ জন হিন্দু। কাস্টমস ক্যাডারে ৩ জনের মধ্যে একজন হিন্দু, পুলিশ ক্যাডারে ৮ জনের মধ্যে ২ জন হিন্দু৷ এছাড়াও ট্যাক্সে ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই হিন্দু, সমবায় ক্যাডারে ৩ জনের মধ্যে ১ জন হিন্দু এবং রেলওয়ে ক্যাডারেও একজন বাদ পড়েছেন। তিনিও হিন্দু ছিলেন। ফুডেও ৩ জন বাতিল হওয়া চাকরি পাওয়াদের মধ্যে ২ জন হিন্দু। বাংলাদেশ থেকে সূত্র মারফত খবর যা পাওয়া গেছে তাতে ৪৩ তম বি সি এস ক্যাডারের ১৫ অক্টোবরের যে গ্যাজেটটা বের হয়েছিল, তা পরে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। দিন কয়েক পরে গ্যাজেটটা ফের বার হয়। সেখানে সব হিসেবনিকেশ বদলে যায়, ২৬৭ জনের মধ্যে ১৬৭ জন সনাতন ধর্মের।
তবে অসমর্থিত সূত্রে খবর, আবেদন করা প্রায় দেড় হাজার জন বাদ পড়েছেন। সূত্রের দাবি, এরা প্রত্যেকেই হিন্দু ক্যাডার। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তথা জামাত-ই-ইসলামির কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী জানান, “বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। এই দেশে ৯০ শতাংশ মুসলিম। ফলে পুলিশ হোক কিংবা সরকারি চাকরি, মুসলিমরাই অগ্রাধিকার পাবেন।”