নৈরাজ্যের বাংলাদেশে ফের নিশানায় সংখ্যালঘুরাফের একবার অশান্ত বাংলাদেশ। একটি মৃত্যু ঘিরে 'সোনার বাংলা' বদলে গিয়েছে রক্তাক্ত বাংলাদেশে। কার্যত গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে প্রতিবেশী দেশটিতে। অগাস্ট ২০২৪-এর আন্দোলনের অন্যতম মুখ ওসমান হাদি-র মৃত্যু ঘিরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশে। রাস্তায় জ্বলছে আগুন, অবরোধ রাস্তা, খুন করা হয়েছে সাংবাদিককে। তবে এরইমধ্যে হিংসার শিকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরাও।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলাদেশের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকায় হিন্দু ধর্মের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল ব্যক্তি। এমনকী খুনের পর ওই যুবকের মরদেহ গাছের সঙ্গে বেঁধে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ভালুকা থানার ডিউটি অফিসার রিপন মিয়া।
ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে এদেশের বিজেপি নেতারাও। অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা ঘটনা পোস্ট করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। বঙ্গ বিজেপিও এই ঘটনায় প্রতিবাদে সরব। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম দীপু চন্দ্র দাস। তিনি একটি পোশাকের কারখানায় কাজ করতেন।
তবে শুধুমাত্র হিন্দু ব্যক্তি নন। বাংলাদেশে হিংসাত্মক আক্রমণের শিকার হয়েছেন বহু মুক্তমনা সাংবাদিকরাও। কার্যত তাণ্ডব চালানো হয়েছে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সংবাদমাধ্যমের অফিসে। অবস্থা এমন যে, প্রথম আলো প্রত্রিকা শুক্রবারের সংস্করণই প্রকাশ করতে পারেনি। এমনকী অফিস ভাঙচুর হওয়ায় বন্ধ রয়েছে অনলাইন সংস্করণও। ডেইলি স্টারেরও অনলাইন সংস্করণ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে বাংলাদেশ এখন নৈরাজ্যভূমি।
কী নিয়ে এত অশান্তি?
জানা গিয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ই-রিকশাতে চেপে যাচ্ছিল হাদি। এই সময়ই তাকে এক দুষ্কৃতী গুলি করে বলে অভিযোগ। প্রাথমিকভাবে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পরিস্থিতি খারাপ হলে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় এভারকেয়ার হসপিটালে। কিন্তু সেখানেও তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়নি। এরপর তাকে গত শনিবার সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হল না। হাদির মৃত্যুর পরেই কট্টরপন্থীরা রাস্তায় নেমে পড়ে। বৃহস্পতিবার গোটা রাত বাংলাদেশজুড়ে হিংসা চলেছে। শুক্রবারও তা চলছে।
এনসিপি-র নেতা নাহিদ ইসলাম বলছেন, বাংলাদেশে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশে সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র ছায়ানট ভাঙচুর করে দিয়েছে কট্টরপন্থীরা। আল্লা হু আকবর স্লোগান দিয়ে তারা জ্বালিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের একের পর এক ঐতিহ্যশালী ভবন। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে হাদিকে শহিদ ঘোষণা করেছেন।