ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ৪০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। বাংলাদেশের তিনদিকে ভারতের সীমান্ত রয়েছে। একপাশে সমুদ্র। অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর। একটি ছোট অংশ বার্মা অর্থাৎ মায়ানমারের সঙ্গে রয়েছে। যা প্রায় ৪১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। বাংলাদশের সঙ্গে ভারতের যে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি আছে সেগুলি হল অসম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ।
ভারত ও বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম স্থল সীমান্ত। বাংলাদেশের ছয়টি বিভাগ ভারত সীমান্তে অবস্থিত। সেগুলো হল ময়মনসিংহ, খুলনা, রাজশাহি, রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম। ভারতের যে রাজ্যগুলি বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে তাদের দৈর্ঘ্য হল- অসমের সঙ্গে ২৬২ কিলোমিটার, ত্রিপুরায় ৮৫৬ কিলোমিটার, মিজোরাম ৩১৮ কিলোমিটার, মেঘালয় ৪৪৩ কিলোমিটার এবং পশ্চিমবঙ্গ ২২১৭ কিলোমিটার।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো বাংলাদেশের সীমান্ত বড় জটিল। কোথাও পাহাড় আছে। ভয়ঙ্কর জঙ্গলে কোথাও সমতলভূমি আবার কোথাও নদী-নালা। তাই এখানে টহল দেওয়া খুবই কঠিন। এর নিরাপত্তার দায়িত্ব বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স অর্থাৎ বিএসএফ-এর।
এই পরিসীমা সবচেয়ে বড় হুমকি কী? এই সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল হলে এই সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, মানব পাচার, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান, গবাদি পশুর অবৈধ চলাচল বেড়ে যায়। এছাড়া সন্ত্রাসবাদী হামলার ঝুঁকিও বাড়ে।
তবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। যেমন- তিন বিঘা করিডোর, মুহুরি নদী বিরোধ এবং পিরদিওয়া সীমান্ত বিরোধ। তবে বর্তমানে কোনও ধরনের বিরোধ চলছে না। তবে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর সীমান্তে আরও সতর্ক হয়েছে বিএসএফ। এর সঙ্গে দেশের তিন বাহিনীও। দুই দেশই সীমান্তের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। যৌথ সীমান্ত টহল শুরু করেছে। গোয়েন্দা তথ্য আদান প্রদান শুরু করেছে। সীমান্তে স্থানীয় বাজার বাড়াতে সীমান্ত বাজার চালু করা হয় যাতে উভয় দেশ একে অপরের পণ্য পেতে পারে।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ ও ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়। যাতে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের অবসান হয়। এ ছাড়া ২০২০ সালে আবারও সীমান্তে নিরাপত্তা ও সহায়তা বাড়ানোর চুক্তি হয়। একটি যৌথ সীমান্ত টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়। যারা এখনও কাজ করছে।