scorecardresearch
 

India-Bangladesh Relations: তিস্তা চুক্তি এবার হবে? যে কারণগুলির জন্য ভারতের ভোট-রেজাল্টের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

সপ্তম দফা ভোটে শেষে এখন রুদ্ধশ্বাস প্রতিক্ষা চলছে গোটা দেশে। ৪ তারিখে প্রকাশ পেতে চলেছে ফলাফল। যদিও এদেশের অধিকাংশ মিডিয়া হাউসের এক্সটি পোল সমীক্ষা বলছে দেশে ফের একবার গঠিত হতে চলেছে মোদী সরকার। ভারতে ফের একবার নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে তার প্রভাব কী পড়বে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে? কারণ এদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেশী দেশটিতেও কম আগ্রহ নেই। ভারতের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আগ্রহ মূলত রয়েছে দুইটি কারণে।

Advertisement
এই কারণেই ভারতের নির্বাচনী ফলাফলে নজর বাংলাদেশেরও এই কারণেই ভারতের নির্বাচনী ফলাফলে নজর বাংলাদেশেরও

সপ্তম দফা ভোটে শেষে এখন রুদ্ধশ্বাস প্রতিক্ষা  চলছে গোটা দেশে। ৪ তারিখে প্রকাশ পেতে চলেছে ফলাফল। যদিও এদেশের অধিকাংশ মিডিয়া হাউসের এক্সটি পোল সমীক্ষা বলছে দেশে ফের একবার গঠিত হতে চলেছে মোদী সরকার। ভারতে ফের একবার নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে তার প্রভাব কী পড়বে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে? কারণ এদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেশী দেশটিতেও কম আগ্রহ নেই।  ভারতের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আগ্রহ মূলত রয়েছে দুইটি কারণে। প্রথমত, ভারত প্রতিবেশী দেশ। সেখানে গণতন্ত্রের চর্চা কীভাবে হচ্ছে।  এই স্বাভাবিক আগ্রহ থেকে ভারতের নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম আলাপ-আলোচনা চলছে। আর দ্বিতীয়টি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে ভারতের প্রভাব বেড়েছে এবং বাংলাদেশের নির্বাচনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনায় ভারতের ভূমিকা মুখ্য হয়ে উঠেছে। আর এই বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কি হয় তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। 

বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত তিনটি সরকারের আমলে যে দেশটির সঙ্গে  সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেছে এবং বাংলাদেশের বিদেশনীতিতে যারা সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে, সে দেশটি নি:সন্দেহে ভারত।  মোদীর ভারতও বাংলাদেশকে কম গুরুত্ব দেয়নি। ভারতের বিদেশনীতিতেও বাংলাদেশের গুরুত্ব বিগত দেড় দশকে ক্রমশ বেড়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবেও ভারত একাধিকবার বলেছে, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে বাংলাদেশই তাদের ‘সব চেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী’। এই সময়কালে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, কানেক্টিভিটি বা সংযোগ, অভিন্ন নদীগুলোর জলবন্টন, স্থল ও সমুদ্র সীমায় বিরোধ নিরসন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা – ইত্যাদি বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনায় অভাবনীয় অগ্রগতিও লক্ষ্য করা গেছে। তবে এর মধ্যে সবগুলো ইস্যুরই যে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে তা বলা যাবে না। সীমান্ত বিরোধ মিটলেও সীমান্তে হত্যা নিয়ে অস্বস্তি যেমন রয়েই গিয়েছে, তেমনি আবার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও তিস্তা চুক্তির জট এখনও খোলা যায়নি।

Advertisement

ইতিমধ্যে বাংলাদেশে গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জিতে শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন। এভার ভারতেও মোদী সরকার ফিরলে সম্পর্কের সমীকরণ খুব একটা বদলাবে না।  যদিও অতীতে দেখা গেছে যে, ভারতের নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের বাংলাদেশ নীতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসে না। বিশেষ করে কংগ্রেসকে পরাজিত করে বিজেপি যখন প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিল তখন অনেকেই মনে করেছিল, আওয়ামী লিগের সঙ্গে সম্পর্কের হয়তো অবনতি ঘটবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে তার উল্টো। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনও যদি শেষ পর্যন্ত কোন নাটকীয় ঘটনা ঘটে, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে কি সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন ঘটবে? এটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন

তবে বিভিন্ন মহল মনে করছে  যে, নরেন্দ্র মোদী টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের ব্যাপারে কিছু ভিন্ন চিন্তা করতে পারেন। বিশেষ করে চিনের প্রভাব যেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে না পড়ে সেজন্য হয়তো নতুন সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এদিকে বিশিষ্টি সাংবাদিক ও লেখক সুবীর ভৌমিক bangla.aajtak.in-কে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কাছেও ভারতের এই নির্বাচন দুটি  কারণে খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, শেখ হাসিনা চলতি বছর ক্ষমতায় ফিরলেও সেখানে সঠিক ভাবে নির্বাচন হয়নি বলেই মত বাংলাদেশের অনেক মানুষের। অন্যদিকে ভারতে সাত দফায় যেভাবে নির্বাচন হয়েছে এবং বিরোধীর যেভাবে অংশ নিয়েছে তা পুরোটাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতের থেকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পাঠ নেওয়া উচিত বলেই মনে করেছেন বাংলাদেশের অনেক নাগরিক।

দ্বিতীয়ত, ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক  সম্পর্কের ক্ষেতে মোদী ও হাসিনা দুজনেই যথেষ্ট আন্তরিক। দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে সম্পর্কও অত্যন্ত ভাল। আগামী দিনে এই সম্পর্ক  আরও মজবুত হবেই বলে আশা করছেন কূটনীতিকরা। বিশেষত তিস্তা চুক্তি নিয়ে অধীর আগ্রহে  অপেক্ষায় রয়েছে হাসিনা সরকার। তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরলে তা বাস্তবায়ন করা মোদী সরকারের কাছে অবশ্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।  যদিও  দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী ও ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকার বিগত এক দশকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যে ‘টেমপ্লেট’ বা কাঠামোটা গড়ে তুলেছেন, সেটা আরও অন্তত পাঁচ বছর অক্ষুণ্ণ থাকবে বলে ধরেই নেওয়া যায়।


 

Advertisement