Vijay Diwas 2025: একাত্তরের 'বিজয় দিবসে' বিশ্বরেকর্ড চাইছে বাংলাদেশ, মুক্তিযোদ্ধারা আসবেন ভারতে

আগামী ১৬ ডিসেম্বর হাসিনাহীন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিজয় দিবস। এদিকে চলতি সপ্তাহেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হবে হবে বাংলাদেশে। এরমধ্যেই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন নিয়ে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালনের জন্য অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি এবার সর্বাধিক পতাকা উড়িয়ে প্যারাস্যুটিং করে বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ।

Advertisement
একাত্তরের 'বিজয় দিবসে' বিশ্বরেকর্ড চাইছে বাংলাদেশ, মুক্তিযোদ্ধারা আসবেন ভারতে'বিজয় দিবস' নিয়ে ঠিক কী প্ল্যান ইউনূস সরকারের?

আগামী ১৬ ডিসেম্বর হাসিনাহীন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিজয় দিবস। এদিকে চলতি সপ্তাহেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হবে হবে বাংলাদেশে। এরমধ্যেই  ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন নিয়ে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালনের জন্য অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি এবার সর্বাধিক পতাকা উড়িয়ে প্যারাস্যুটিং করে বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদযাপনে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাইডাইভিং করবেন। এটিই হবে বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক  বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। বিজয় দিবস ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে  সোমবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রকের উপদেষ্টা ফারুক ই আজমের সভাপতিত্বে বৈঠকে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের  সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, জনপ্রশাসন মন্ত্রকের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই বৈঠকে  উপস্থিত ছিলেন।

কী হচ্ছে এবার বিজয় দিবসে?
জানা যাচ্ছে বিজয় দিবসের দিন সকাল ১১টা থেকে ঢাকার তেজগাঁওয়ে পুরন বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পৃথকভাবে ফ্লাই পাস্ট মহড়া পরিচালনা করবে। চলবে বিজয় দিবসের বিশেষ ব্যান্ড-শো। সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করবেন। জনগণের জন্য এই বিশেষ আয়োজন উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য শহরেও সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী ফ্লাই-পাস্ট মহড়া পরিচালনা করবে। সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ বাহিনী, বিজিবি, আনসার বাহিনী ব্যান্ড-শো’য়ের আয়োজন করবে। প্রতিটি আয়োজন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

Advertisement

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণকের  উদ্যোগে গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশের সকল জেলা-উপজেলায় তিন দিনব্যাপী বিজয়মেলা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রক। অপরদিকে, সংস্কৃতি মন্ত্রকের  উদ্যোগে ১৫  ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল ৩ টে নাগাদ আ্যাক্রোবেটিক শো ও সন্ধ্যা ৬টায় যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’ অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টে থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিবেশিত হবে বিজয় দিবসের গান। পাশাপাশি, সারাদেশের ৬৪ জেলায় একযোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা।

ভারতে ২০ জনের প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ
প্রসঙ্গত বাংলাদেশ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য একটি গৌরবময় দিন ১৬ ডিসেম্বর তথা বিজয় দিবস। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে প্রথা মেনে ভারতে মুক্তিযোদ্ধা এবং সেনাকর্তাদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সেনার পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ভানগুরু রঘু জানিয়েছেন, প্রতি বছরের মতো এবারও বিজয় দিবস উদযাপন করবে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেই উপলক্ষে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ৮ মুক্তিযোদ্ধা, দুই সেনা কর্মকর্তা ও তাদের স্ত্রীদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। জানা গেছে, রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) কলকাতায় এসে পৌঁছবে বাংলাদেশের এই প্রতিনিধি দল। ১৫ ডিসেম্বর তারা ইস্টার্ন কমান্ডের মঙ্গল পান্ডে মিলিটারি ট্রেনিং সেন্টার এলাকার ‘মিলিটারি ট্যাটু’-তে অংশ নেবেন। একই দিনে তারা লোকভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় স্মারকে মূল অনুষ্ঠান হবে। সেখানে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলটি মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

ভারতীয় সেনার অবদান
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের  স্বাধীনতার যুদ্ধে সহায়তা করেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ডিসেম্বর মাসে সরাসরি ভারত যুদ্ধে জড়ায়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, ৯৩,০০০ পাকিস্তানি সেনা ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধের পর বাংলাদেশ একটি নতুন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তারপর থেকে প্রতি বছর ভারতীয় সেনাবাহিনী এই দিনটিকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে।

POST A COMMENT
Advertisement