Bangladesh : বাংলাদেশে এবার আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি, উগ্রপন্থীদের তাণ্ডবের সম্ভাবনা বাড়ছে

বাংলাদেশে বাড়ছে ধর্মীয় উগ্রবাদ। সাধারণ নির্বাচনের আগে ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়কে 'অমুসলিম' ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। সেজন্য ১৫ নভেম্বর ঢাকায় মিছিল করার কথা ইসলামি ধর্মগুরুদের।

Advertisement
বাংলাদেশে এবার আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি, উগ্রপন্থীদের তাণ্ডবের সম্ভাবনা বাড়ছে   আহমদিয়াদের মসজিদ
হাইলাইটস
  • বাংলাদেশে বাড়ছে ধর্মান্ধতা
  • সাধারণ নির্বাচনের আগে ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়কে 'অমুসলিম' ঘোষণার দাবি জানিয়েছে

বাংলাদেশে বাড়ছে ধর্মীয় উগ্রবাদ। সাধারণ নির্বাচনের আগে ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়কে 'অমুসলিম' ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। সেজন্য ১৫ নভেম্বর ঢাকায় মিছিল করার কথা ইসলামি ধর্মগুরুদের। পাকিস্তান ও ভারতের ইসলামি ধর্মগুরুদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের ধর্মগুরুদের মদতেই এই মিছিল করার তোড়জোর শুরু করেছে বাংলাদেশের উগ্রপন্থীরা। 

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরই বাংলাদেশে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ শুরু হয়। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, লুটপাট চালানো হয়। যদিও ওই সম্প্রদায়কে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি বাংলাদেশে এই প্রথম নয়। তবে ইউনূসের জমানায় তাঁদের ভয়ের পরিবেশে জীবন যাপন করতে হচ্ছে বলে দাবি করছেন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অনেকে। 

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান,' বাংলাদেশে ধর্মান্ধতা বাড়ছে। এখন চরমপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত। ধর্মীয় নির্যাতন বাড়ছে। সরকার সব জানে অথচ চুপ।'

শুধু মিছিল হবে তা নয়, বাংলাদেশের ধর্মান্ধ সংগঠনগুলো এক লাখ জনকে গণহত্যার হুমকি দিয়েছে। সম্প্রতি এক সমাবেশে বাংলাদেশি ধর্মগুরু মুফতি এনায়েতুল্লাহ আব্বাসি বলেন, '৫ আগস্ট বিদ্রোহ সংগঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশে শীঘ্রই উলেমাদের নেতৃত্বে বিপ্লব হবে। কোনও সমাবেশ বা মিছিল হবে না। যেখানেই আহমদিয়া পাওয়া যাবে, হত্যা করা হবে। প্রয়োজনে, সংসদ দখল করে বাংলাদেশের ধর্মগুরুরা আহমদিয়াদের অমুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করার দাবি পূরণ করবে।' 

আবার বাংলাদেশের খেলাফত মজলিসের নেতা মৌলভী মামুনুল হক আবার আরও হিংসাত্মক হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, 'আহমদিয়াদের এখনই নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে বাংলাদশে আগুন জ্বলবে।' 

পাকিস্তানের পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ? 

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, আহমদিয়াদের উপর বাংলাদেশে আগেও অত্যাচার হয়েছে। তবে পাকিস্তানে যেভাবে সংঘবদ্ধ আন্দোলন হয়, তা কিন্তু বাংলাদেশে হয়নি। এবার হয়তো বাংলাদেশ সেই পথেই হাঁটতে চলেছে। 

পাকিস্তানে কীভাবে আহমদিয়াদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছিল? 

১৮৮৯ সালে অবিভক্ত পঞ্জাবের গুরুদাসপুরের কাদিয়ানে মির্জা গোলাম আহমদ  আহমদিয়া আন্দোলন শুরু করেন। দেশভাগের পর কাদিয়ান আন্দোলন পাকিস্তানে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭৪ সালে সংবিধানে সংশোধনি এনে  আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণা করা হয়। আজও পাকিস্তানে অত্যাচারিত এই আহমদিয়ারা। তাদের মসজিদ ভেঙে দেওয়া হয়, নমাজে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় না। গত জুন মাসে জুন মাসে পাকিস্তানের পঞ্জাব এবং সিন্ধু প্রদেশে আহমদিয়াদের উপর ৫ লক্ষ পাকিস্তানি টাকা জরিমানা করা হয়। 

Advertisement

 ইসলামপন্থী আলেমরা দাবি করেন, আহমদিয়ারা মুসলিম নয়। কারণ মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে দূত বলেছিলেন। যা ঠিক নয়।  ২০১০ সালের মে মাসে লাহোরে আমদিয়াদের মসজিদে হামলা চালানো হয়। সেখানে ৯০ জনেরও বেশি আহমদিয়া নিহত হয়। যা লাহোর গণহত্যা নামে পরিচিত।

বাংলাদেশে অতীতে আন্দোলন 

আহমদিয়াদের বিরুদ্ধে অতীতেও বাংলাদেশে আন্দোলন হয়েছে। যেমন, ১৯৮৭ সালে ব্রাহ্মণবেড়িয়া অঞ্চলে ছয়টি আহমদিয়া মসজিদ দখল করা হয়। আলোচনার মাধ্যমে এই সম্প্রদায় দুটি মসজিদ ফিরিয়ে নেয়। তবে চারটি এখনও কব্জামুক্ত করা যায়নি। নয়ের দশকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আহমদিয়াদের অমুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করার দাবি ওঠে। বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদের খতিব মৌলভি ওবায়দুল হক পাকিস্তান সফরের পর এই দাবি করেছিলেন। ২০০১ সালে একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আহমদিয়াদের নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, পরে যদিও এই আদেশ বাতিল করা হয়েছিল। 

 

POST A COMMENT
Advertisement