Mamata Banerjee Letter PM Modi Rabindranath Tagore House Vandalism: বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক ভিটে ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে একটি চিঠিতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “এই পৈতৃক ভিটে শুধুমাত্র একটি বাড়ি নয়—বরং এটি উপমহাদেশের সৃষ্টিশীলতার এক বিশাল কেন্দ্র। কবি নিজেই এখানে একাধিকবার এসেছেন এবং তাঁর অনেক অমর সৃষ্টি এখানে রচিত হয়েছে। এই স্থানের সঙ্গে তার সৃষ্টিশীলতার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।”
এই বর্বরোচিত ঘটনায় শুধু ঐতিহাসিক সম্পত্তি নয়, বরং বাঙালি জাতির জাতীয় গর্ব এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপরও আঘাত এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এটি আমাদের অনুভূতি, আমাদের অমূল্য ঐতিহ্য এবং ইতিহাসের গর্বে এক নিকৃষ্ট হামলা।”
এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বদেশী আন্দোলনের সময় বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে নিজস্ব কন্ঠ তুলে দাঁড়িয়েছিলেন—অতএব ‘এই আঘাত গোটা বাঙালি সমাজের কাছে এক যন্ত্রণার বিষয়।’
চিঠিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছেন, এই ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কড়া আলোচনার নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে যাতে এরকম ঘটনা সংঘটিত না হয়—তাও আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া জানাটির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী যোগ করেন, “যদিও অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে, তবু কঠোর আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ অন্তত ভবিষ্যতে এমন বর্বরোচিত হামলা রোধে সহায়তা করবে।”
বাংলাদেশ প্রশাসন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্রসংক্রান্ত ঐতিহাসিক কাছারিবাড়ির প্রবেশ বন্ধ করেছে। তবে প্রশাসন ঘোষণার আগেই বাড়িটি ভাঙচুরের কবলে পড়ে—মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট ও ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কিছু মানুষের জড়িত থাকার কথা ভাবা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কাছারিবাড়িটি—যা ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যে নির্মিত—একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পট হিসেবে পরিচিত। কবির পরিবার ১৯৪০ সালে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের সময় এটি অধিগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ বারবার এখানে আসতেন। ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে।
মঙ্গলবার বাড়ি দেখভালের সময় স্থানীয় সরকারি কর্মচারীদের পরিবারের সঙ্গে বিরোধ থেকে হাতাহাতি ও মারামারি tới সংঘর্ষে পরিণত হয়। আহত দর্শনার্থীরা পরে বিক্ষোভ মিছিল করেন, শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিলের মাধ্যমে বাড়ির কাস্টোডিয়ানের অফিস, অডিটোরিয়ামসহ জানালা ও দরজা ভাঙচুর করে।