মাদক মামলায় এখন সিআইডির জালে অভিনেত্রী পরীমনি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতিদিনই উঠে আসছে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ উঠেছে সুন্দীর নায়িকার সঙ্গ পেতে বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এমনকী প্রভাবশালীদের কেউ কেউ পরীমনিকে নামিদামি সব উপহার কিংবা মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করতেন। যার মধ্যে শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশের সিটি ব্যাঙ্ক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর আরেফিনের নামও। তিনি নাকি পরীমনিকে বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দিয়েছেন। তাই নিয়েই এখন পদ্মাপারে তুমুল শোরগোল।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে পরীকে ‘মাসেরাতি’ ব্র্যান্ডের সাড়ে ৩ কোটি টাকা দামের গাড়িটি এই ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা উপহার দেন। যদিও পুরো বিষয়টিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন মাসরুর। উল্টে সিটি ব্যাঙ্ক কর্তার দাবি, গাড়ি উপহার দেওয়া তো দূরের কথা পরীমনির সঙ্গে কখনই দেখা হয়নি। গত জুনে ‘উত্তরা বোট ক্লাব’ ঘটনায় প্রথমবার সংবাদমাধ্যমে তিনি পরীমনি নামটা শুনেছেন।
ফেসবুকে ব্যাঙ্ক কর্তা বিশাল একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন ‘আমেরিকায় বিএসইসি আয়োজিত বিনিয়োগ রোডশোতে অংশ নিয়ে আমি এখন ঢাকার পথে। এর মধ্যেই শিকার হলাম এক প্রবল মিথ্যাচারের। (একটি গণমাধ্যম) লিখে দিল- ‘একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিনের সঙ্গে পরীমনির অডিও রেকর্ডে একটি গাড়ি উপহার দেওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান শওকত রুবেলের সঙ্গে পরীমনির গভীর সখ্যের বিষয়টি কথোপকথনে উঠে এসেছে।’
আমার কোনো কিছু বলার কোনো ভাষা নেই।
তার নিজেরই ব্যক্তিগত গাড়ি নেই। এই অবস্থায় পরীমনিকে এতো দামি গাড়ি কিভাবে উপহার দিবেন সেটা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন আরেফিন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার নিজের একটাও গাড়ি নেই। ব্যাঙ্ক আমাকে চলার জন্য গাড়ি বরাদ্দ দিয়েছে, তাতেই চড়ি। ব্যাঙ্কের চাকরির শেষে নিশ্চয় কোনো কার লোন নিয়ে একটা গাড়ি কিনে তাতে চড়ব।’ তিনি তার পোস্টের একেবারে শেষ দিকে মিথ্যাচারের জন্য সমাজের আদালতে বিচার চেয়েছেন।
এদিকে ইন্ডাস্ট্রিতে পরীমনির গডফাতার হিসাবে পরিচিত প্রযোজক রাজের ২ গাড়ি বাজেয়াপ্ত করল সিআইডি। রবিবার রাতে রাজের বনানীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিআইডির একটি দল। তল্লাশি অভিযানে একটি হ্যারিয়ার (ঢাকা মেট্রো-গ-১৩-৪৬১৭) ও আরএভি-৪ মডেলের একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৬৪০১) বাজেয়াপ্ত করা হয়। সোমবার সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক জানান, রাজের বাড়ি থেকে আমরা গতরাতে দুটি গাড়ি জব্দ করেছি। গাড়ি দুটো কীভাবে কেনা, গাড়ি দুটির কার নামে কেনা, কোথায় থেকে, কবে কেনা সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। এই গাড়ি কেনার অর্থ রাজ কীভাবে পেয়েছেন সেটাও আমরা খতিয়ে দেখবো। পরীমনির বাড়িতে মদের সাপ্লায়ার ছিলেন রাজ, এছাড়া মডেলদের দিয়ে বিভিন্ন পার্টি এবং ইনডোর প্রোগ্রামের আড়ালে বিশিষ্টজন-ব্যবসায়ীদের ব্ল্যাকমেইল ও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এব্যাপারে রাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।