ওপার বাংলার শিল্পী হলেও এপার বাংলাতেও যথেষ্ট জনপ্রিয় কমেডিয়ান আবু হেনা রনি। যারা ‘মীরাক্কেল’-এর একনিষ্ঠ ভক্ত, তারা আবু হেনা রনিকে চেনেন। বাংলাদেশের বাসিন্দা রনি মীরাক্কেলের সর্বকালের জনপ্রিয় প্রতিযোগীদের মধ্যে অন্যতম। বেশ কয়েক বছর আগে মীরাক্কেলে অংশ নিয়ে বিজয়ীও হয়েছিলেন তিনি। তাঁর কৌতুক বোধ দ্রুত জনপ্রিয়তার চূড়ায় তুলেছিল আবু হেনা রনিকে। সেই রনিই গাজীপুরে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছেন। শ্বাসনালিসহ শরীরের ৩০ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে রনির।
কেমন আছেন রনি?
আবু হেনা রনির শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত না হলেও কিছুটা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, আবু হেনা রনি বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন। তার শ্বাসনালিসহ শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে তাকে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তবে এখনো রনিকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা পর তার বিষয়ে অগ্রগতি জানানো সম্ভব হবে।
কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা?
বাংলাদেশের ঢাকার গাজিপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) চার বছরপূর্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সেই অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি দগ্ধ হয়েছেন। তিনি ছাড়া আরও চারজন দগ্ধ হয়েছেন। আইসিইউতে রাখা হয়েছে কৌতুকশিল্পীকে। তবে পুরোপুরি ভাবে সঙ্কটমুক্ত হননি তিনি। আহতদের মধ্যে রনির অবস্থাই বেশি আশঙ্কাজনক। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি ও মিডিয়া) আবু সায়েম নয়ন জানান, আহতদের প্রথমে দ্রুত শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের মধ্যে আবু হেনা রনি ও আরও ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে কীভাবে বেলুনগুলোতে বিস্ফোরণ হলো, সেই প্রশ্নে মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর ওসি রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘বেলুন নিয়ে মঞ্চের পেছনে যাওয়ার পর কয়েকজন বেলুনে লাগানো গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লেখা ফেস্টুন বেলুন খুলতে চেষ্টা করতে থাকে। তখন কেউ একজন ফেস্টুনের সুতা লাইটার জ্বালিয়ে বিচ্ছিন্ন করতে চেষ্টা করে। তখনই আগুন লেগে বেলুনগুলো ব্লাস্ট হয়ে যায়।’
দোয়া চাইছেন রনির মা
ছেলের এমন শারীরিক অবস্থায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রনির মা বিনা বেগম। সংবাদমাধ্যমের সামনে ছেলের অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঠিকমতো কথাই বলতে পারছিলেন না। কাঁদতে কাঁদতে বিনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে অসুস্থ। আমি দেশবাসীর কাছে আবেদন করছি আল্লার কাছে দোয়া করতে যাতে ওকে আমার কোলে ফিরিয়ে দেন। ’ এটুকু বলেই ফের কাঁদতে থাকেন তিনি। এদিকে রনির দুর্ঘটনার খবর সামনে আসতেই ফেসবুক জুড়ে চলছে তাঁর সুস্থতা কামনা। তাঁর আরোগ্য কামনায় মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে দুই বাংলা। কৌতুকশিল্পীর এই অবস্থা জানার পর থেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছেন মীর , শ্রীলেখা-সহ একাধিক মীরাক্কেলের তারকা।