
তছনছ বাংলাদেশের ছায়ানটধ্বংসলীলা চলল বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চার পীঠস্থান 'ছায়ানট'-এ। একটা সময়ে যেখানে রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতির চর্চা হত, সেখানে 'আল্লাহ হু আকবর' ধ্বনি তুলে আছড়ে ভাঙা হল হারমোনিয়াম-তবলা। চলল লাঠি-পাথর নিয়ে 'সন্ত্রাস'। মুহাম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশে ভারত বিরোধী ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদের নামে বিক্ষোভকারীদের এই তাণ্ডবের সাক্ষী থাকল গোটা বিশ্ব।
তবলা, হারমোনিয়াম সহ একাধিক বাদ্যযন্ত্র আছাড় মেরে ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সুর, তাল, ছন্দ লেখা খাতাগুলি ছিড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর 'ছায়ানট' -এর একাধিক ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ধানমণ্ডির ছায়ানটের বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় চলে দেদার ভাঙচুর। শিল্পের উপর এই আঘাত বাংলাদেশের ভয়ঙ্কর চেহারা আবারও প্রকাশ্যে এনেছে। এই তাণ্ডবলীলার একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওগুলিতে হামলাকারীদের বলতে শোনা গিয়েছে, 'এখানে ভারতীয় সংস্কৃতির কোনও জায়গা নেই।' যদিও সেই ভিডিওগুলির সত্যতা যাচাই করেনি bangla.aajtak.in.
৬-এর দশকে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া, বেতার বা টেলিভিশনে সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে। সে সময়েই বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতীম রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কলিম শরাফি রবীন্দ্রসঙ্গীত, নাটক ও নৃত্যনাট্যের মঞ্চ 'ছায়ানট' প্রতিষ্ঠা করেন। নিষেধাজ্ঞার মাঝেই গুপ্ত সংগঠনের মতো জেলা শহরগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছিল 'ছায়ানট'-এর শাখা।

২০১৫ সালে সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের রবীন্দ্রচর্চার পীঠস্থান 'ছায়ানট'-কে ভারত সরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত করে। ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ পুরস্কারটি তুলে দেন ছায়ানটের সভাপতি সঞ্জিদা খাতুনের হাতে।
ধানমণ্ডি থানার আধিকারিক মিথুন সিংহ জানান, খবর পাওয়ার পরে সেখানে যায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য ছায়ানট সঙ্গীতবিদ্যায়তনের ক্লাস থেকে শুরু করে সংগঠনের সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গোটা রাত বাংলাদেশজুড়ে হিংসা চলেছে। শুক্রবারও তা চলছে। নাহিদ ইসলাম বলছেন, 'বাংলাদেশে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে।' একটি মৃত্যু। আর তাতেই জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। আক্ষরিক অর্থেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে।