মহম্মদ ইউনূস -- ফাইল ছবিজাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে কার্যত উঠেপড়ে লেগেছেন বাংলাদেশে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। যে ইউনূসের বিরুদ্ধে ভোট বানচালের ছক কষার অভিযোগ করছে খালেদা জিয়ার দল BNP, সেই ইউনূস এবার দাবি করছেন, দেশের অন্দরে ও বিদেশ থেকে নাকি প্ল্যান করা হচ্ছে, যাতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন ভেস্তে যায়। নিজেরাই শেখ হাসিনার আওয়ামী লিগ সহ প্রায় ১৫টি দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করে, এখন আওয়ামী লিগের জুজু দেখছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
নির্বাচন বানচালের প্ল্যান
মহম্মদ ইউনূসের প্রেস সেক্রেটারি সফিকুল আলমের কথায়, 'নির্বাচনকে বানচাল করতে দেশের অন্দরে ও বাইরে থেকে নানা শক্তি চেষ্টা করছে ও করবে। ছোট নয়, অনেক শক্তিশালী ফোর্স ভোট ভেস্তে দেওয়ার প্ল্যান ছকছে। হঠাত্ করেই কোনও হামলা হতে পারে।' ইউনূস সরকারের আশঙ্কায় একটি বহুল প্রচলিত বাংলা প্রবাদ মনে পড়ছে, 'ঠাকুর ঘরে কে রে...'।
AI জেনারেটেড ইমেজ ও ভিডিও নিয়ে উদ্বেগ
বাংলাদেশে ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের মিটিং হয়েছে। সেই মিটিংয়ে ইউনূস দাবি করেছেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ নানা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দেশের অন্দরে ও বাইরে থেকে ভোট ভেস্তে দেওয়ার ছক চলছে। তাঁর কথায়, 'AI জেনারেটেড ইমেজ ও ভিডিও বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, ইন্টারনেটে নানা অপ্রচার চলছে। এই ধরনের কন্টেন্ট অবিলম্বে রুখতে হবে। যাবতীয় বাধা পেরতে হবে।'
হাসিনার জুজু দেখছেন ইউনূস?
যে দিন ইউনূস এই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, সে দিনই কাকতালীয় ভাবে শেখ হাসিনা ইন্টারভিউ দিলেন একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে। গত বছরের ৫ অগাস্টে বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার প্রথম সাক্ষাত্কার। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লিগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে। ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। বুধবারের সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, 'লক্ষ লক্ষ সমর্থক এই নির্বাচন বর্জন করবে।' আওয়ামী লিগ না থাকায় খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) এখন সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা ঢাকায় হঠাৎ হঠাৎ রাস্তায় নেমে মিছিল করছে, যাতে নিজেদের উপস্থিতি বোঝাতে পারে। কিন্তু পুলিশ নিষিদ্ধ দল-এর এই কর্মসূচির জন্য শত শত কর্মীকে গ্রেফতার করছে। বুধবারও রাজধানীর নানা জায়গায় আচমকা মিছিল করার অভিযোগে আওয়ামী লিগের পাঁচজন যুবনেতাকে আটক করা হয়। শেখ হাসিনা সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি এখনও দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
হাসিনার কথায়, বাংলাদেশে এখন একটাই পথ, মুক্ত, নিরপেক্ষ আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আওয়ামী লিগকে বাদ দিয়ে কোনও সরকার গঠন করা মানে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা। কোটি কোটি মানুষ আওয়ামী লিগের সমর্থক, তাঁদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে টেকসই রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়া সম্ভব নয়।