মুহাম্মদ ইউনূসবাংলাদেশে এক হিন্দু ব্যক্তিকে হত্যা করে গাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে এবার মুখ খুলল অন্তর্বর্তী সরকার। ময়মনসিংহের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, 'নতুন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনও স্থান নেই। এখানে উন্মত্ত জনতার এহেন আচরণ চলবে না।' একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, দোষীদের কোনও মতেই রেয়াত করা হবে না।
বাংলাদেশের এই অশান্ত পরিবেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দেশের নাগরিকদের সজাগ এবং সাবধান থাকতে বলেছে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মতো হিংসাত্মক ঘটনার ক্ষেত্রে কোনওরকম প্ররোচনায় পা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইউনূস। তাঁর মতে, একদল মানুষ বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চেষ্টা করেছে দেশে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করতে উদ্যত হয়েছে। সে ব্যাপারে সেনাকে সতর্ক থাকাতে বলেছেন তিনি। আগামী দিনে নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা সর্বোচ্চ অঙ্গীকার আমাদের কাছে।
এছাড়াও সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ নিয়েও সরব হয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদকর্মীদের উপর হামলাকে ন্যক্কারজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন। ইউনূসের কথায়, ‘এই হামলা আমাকে গভীর ভাবে ব্যথিত করেছে। এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।' বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাকে ‘স্বাধীন গণমাধ্যমের উপর হামলার শামিল’ বলেও উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, এর ফলে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রগতি এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাপ্রাপ্ত হবে।
'প্রথম আলো' এবং 'দ্য ডেইলি স্টার'-এর পূর্ণ নিরাপত্তা এবং সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন 'ইনকালাব মঞ্চ'-এর ওসমান হাদি। বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন ইউনূস। দেশবাসীকে সংযত থাকার আবেদন করেছিলেন। অর্থাৎ, হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যে অশান্তি হতে পারে, তা আগেই আঁচ করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু তাঁর আবেদন কার্যত অগ্রাহ্য করে রাতেই নানা প্রান্তে শুরু হয় তাণ্ডব।