পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান বাংলাদেশেইউনূসের বাংলাদেশে পাকিস্তান প্রেম ও ভারত বিরোধিতা চরমে উঠেছে। পাকিস্তানের জঙ্গিদের জন্য অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে শেখ মুজিবের স্বপ্নের বাংলাদেশ। পাকিস্তানের সেনাকর্তাদের সঙ্গে দেদার মিটিং, খানাপিনা, ৭১-এর সেই নির্মম অত্যাচার ভুলে গিয়ে এখন বাংলাদেশ-পাকিস্তান 'ভাই ভাই'। এমনকী পাকিস্তানের লস্কর ই তৈবা জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশে ভারত সীমান্তের কাছে উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছে। এহেন বাড়াবাড়িতে এবার বাংলাদেশের অন্দরেই বিরোধিতা শুরু হল। পাকিস্তান বিরোধিতা আগুন ধিক ধিক করে জ্বলতে শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে কোনও আপস করতে রাজি নয়
২০২৪ সালের অগাস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে পাকিস্তানের প্রতি দরদ বেড়েছে। বিশেষ করে ভারত বিরোধী হাওয়া ওঠা শুরু হয় যখন, তখনই বোঝা গিয়েছিল, হাসিনা সরকারকে ফেলার চক্রান্ত করে কট্টরপন্থী জামাত ও ইউনূসরা পাকিস্তানের কাছে দেশটিকে বেচে দেওয়ার ছক কষে ফেলেছে। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ছাত্র আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই এবার পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে দেশের তরুণ সমাজ এক অন্যরকম বার্তা দিল গোটা বিশ্বকে। যেখানে অন্তর্বর্তী প্রধান মহম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করার চেষ্টা করছেন, সেখানে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে যুবসমাজ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে কোনও আপোস করতে রাজি নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের প্রতিবাদ
বিজয় দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে এমন দৃশ্য দেখা গেল, যা বাংলাদেশের ইতিহাস এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট একই ফ্রেমে দাঁড় করিয়ে দিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হাতে আঁকা একটি বিশাল ব্যানার টাঙিয়ে দিলেন, যার কেন্দ্রে লেখা, 'NO COMPROMISE WITH RAJAKAR.' ব্যানারের নীচে মাটিতে আঁকা হল পরাজিত পাকিস্তানি পতাকা। ঠিক যেন ১৯৭১-এর পরাজয়ের প্রতীক আবারও চোখের সামনে তুলে ধরা হল পাকিস্তানকে। ছাত্রদের স্লোগান ছিল, 'প্রজন্ম বদলাবে, সত্য বদলাবে না।' এই প্রতিবাদ শুধু রাজনৈতিক সমালোচনা নয়, এটি এক গভীর আবেগ, এক জাতীয় স্মৃতি, যা কোনও কূটনৈতিক সদ্ভাব বা সামরিক বৈঠকের চাপে মুছে যাবে না।
১৯৭১-এর স্মৃতি: বাংলাদেশের আত্মপরিচয়
ছাত্ররা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসর রাজাকারদের হাতে কয়েক লক্ষ শহিদ হয়েছিলেন। বহু মহিলাকে ধর্ষণ করেছিল পাকিস্তানের সেনা ও রাজাকাররা। মানবতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে নৃশংস অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। সেই ক্ষত আজও অসম্পূর্ণ, কারণ রাজাকারদের বিচার সংস্কৃতি এখনও শেষ হয়নি।
প্রতিবাদরত ছাত্রদের বক্তব্য, যে দেশের জন্মই হয়েছে গণহত্যা ও আত্মত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে, সেই দেশ কখনও হত্যাকারী বা তাদের সমর্থকদের সঙ্গে আপস করতে পারে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা কেবল ভৌগোলিক স্বাধীনতা নয়, এটি মর্যাদা, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকার রক্ষার লড়াই। আর সেই লড়াইয়ের স্মৃতি কোনও রাজনৈতিক সরকার বা অস্থায়ী নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে বদলে যেতে পারে না।