হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা যত কাছে আসছে, ততই উত্তেজনা বাড়ছে বাংলাদেশে। কট্টরপন্থী ইসলামি দলগুলো এই উৎসবের খোলা উদযাপনের বিরোধিতা শুরু করছে এবং উৎসবের সময় দেশব্যাপী ছুটির বিপক্ষে বিক্ষোভও দেখাচ্ছে।
সম্প্রতি, চরমপন্থী দলগুলিও ঢাকার সেক্টর ১৩-তে একটি মিছিল করেছে, হিন্দুদের দ্বারা একটি খেলার মাঠ ব্যবহারের বিরোধিতা করে, যারা বহু বছর ধরে অনুষ্ঠানস্থলে দুর্গাপুজো উদযাপন করে আসছে।
ইনসাফ কেমকারি ছাত্র-জনতা নামে একটি সংগঠন একটি প্রতিবাদ করেছে। বাংলায় প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, "রাস্তা বন্ধ করে কোথাও পুজো নয়, প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে জল দূষণ নয়, প্রতিমা পুজো নয়"।
গোষ্ঠীটি একটি ১৬-দফা দাবিও পেশ করেছে, যা পরিবেশগত ক্ষতির বিষয়ে উদ্বেগ উল্লেখ করে জনসাধারণের পুজো প্রদর্শন এবং প্রতিমা বিসর্জনের উপর বিধিনিষেধের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবির মধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য রাস্তা বন্ধ করা এবং উৎসবের ব্যয়ের জন্য সরকারি ত্রাণ তহবিল ব্যবহার রোধ করাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর করা হয়েছে উৎসবের জন্য তৈরি করা দেবী দুর্গার প্রতিমা
ইনসাফ কিমকারি ছাত্র-জনতার যুক্তি, যেহেতু হিন্দুরা জনসংখ্যার দুই শতাংশেরও কম, তাই দুর্গাপুজোয় সরকারি ছুটির নিশ্চয়তা দেওয়া উচিত নয়, কারণ এটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের জীবনকে ব্যাহত করে। তারা আরও দাবি করে যে, ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে কোনও মুসলমানকে হিন্দু উৎসবকে সমর্থন করা উচিত নয়। তাদের দাবির মধ্যে "বাংলাদেশের অনেক বিশেষ জমি দখল করে নির্মিত" মন্দির অপসারণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
"ভারত যেহেতু বাংলাদেশের জাতীয় শত্রু সেহেতু বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিকদেরও ভারত বিরোধী হতে রাজি হতে হবে। এ জন্য মন্দিরে ভারত-বিরোধী ব্যানার ও ভারত বিরোধী স্লোগান রাখতে হবে," অন্য দাবিতে লেখা হয়েছে। এই ঘটনাগুলি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ সৃষ্টি করছে, যা পুজোর দিনগুলিতে সমস্য়া তৈরি করতে পারে বলে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিগত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর হিন্দুদের উপর নানাভাবে আক্রমণের খবর সামনে আসছে বাংলাদেশ থেকে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার আশ্বাস সত্ত্বেও পরিস্থিতি উত্তেজনা বিরাজ করছে। মন্দির ভাংচুর এবং মূর্তি ধ্বংসের খবর, বিশেষ করে খুলনার মতো জেলায়, ক্রমবর্ধমান উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে৷