শেহবাজ শরিফ ও মহম্মদ ইউনূস -- ফাইল ছবিপাকিস্তানের সেনাকর্তা জেনারেল শাহিদ শমসদ মির্জা ঢাকা সফরে গিয়েছেন। বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ্জামানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে প্রতিরক্ষায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও কীভাবে দৃঢ়় করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর (Inter-Services Public Relations) জানিয়েছে, বৈঠকে দুই দেশই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর ইতিবাচক দিক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে সামরিক নেতৃত্বের বিভিন্ন স্তরে নিয়মিত প্রতিনিধি বিনিময়ের বিষয়েও একমত হয়েছে দুই পক্ষ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বদলে যাওয়া আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের। পাশাপাশি দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক ও সহযোগিতা আরও মজবুত করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশে কট্টরপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত ছিল না
বস্তুত, শেখ হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লিগ ভারতের বন্ধু। হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশে কট্টরপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত ছিল না। কিন্তু মহম্মদ ইউনূস যখন থেকে দায়িত্ব নিয়েছে, জামাত ই ইসলামির মতো কট্টরপন্থিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিক ভাবেই পাকিস্তানও কাছে এসেছে। পাকিস্তান মানেই জঙ্গিদের ঘাঁটি। যার ফল, পাকিস্তান এখন অবাধে বাংলাদেশে জঙ্গিনেতাদের পাঠাচ্ছে, এবং ভারত বিরোধী উস্কানিও দিচ্ছে।
কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করে উস্কানি দিচ্ছে
যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল, পাকিস্তানের কুখ্যাত জঙ্গি ইবতিসম ইলাহি জাহির এখন বাংলাদেশ সফরে রয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের জঙ্গি তালিকায় উজ্জ্বল নাম। পাক জঙ্গি সংগঠন মারকাজি জমিয়ত আহল ই হাদিতের জেনারেল সেক্রেটারি। গত ২৫ অক্টোবর ঢাকায় পৌঁছেছে। তাকে দেখা যাচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বাংলাদেশি জেলাগুলিতে ঘুরছে, বক্তৃতা দিচ্ছে ও স্থানীয় কট্টরপন্থী সংগঠনগুলির সঙ্গে নেটওয়ার্ক বাড়াচ্ছে। India Today-র হাতে যেভিডিও এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, জাহির চপাইনবাবগঞ্জে উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছে। কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করে উস্কানি দিচ্ছে।
দেড় দশকে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধ ছিল
আবার ইসলামাবাদও খুশি হয়ে বাংলাদেশের জন্য করাচি বন্দর খুলে দিয়েছে। প্রায় ২০ বছর পরে ফের বৈঠক করেছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি)। এর আগে ঢাকা এবং ইসলামাবাদের জেইসি স্তরের শেষ বৈঠক হয়েছিল ২০০৫ সালে। ২০০৫ সালের ওই বৈঠকের সময় বাংলাদেশের শাসনভার ছিল বিএনপির হাতে। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। পরে ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসেন হাসিনা। তখন থেকেই ঢাকা এবং ইসলামাবাদের সম্পর্কে শীতলতা তৈরি হয়। হাসিনা জমানার দীর্ঘ দেড় দশকে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল।
বস্তুত, বাংলাদেশে যদি ফেব্রুয়ারিতে ভোট হয়, সেখানে আওয়ামী লিগ, জাতীয় পার্টি সহ বহু দলকে নির্বাচনে অংশই নিতে দেওয়া হচ্ছে না, তাই ফাঁকা মাঠে গোল করে জিতে যেতে পারে খালেদা জিয়ার BNP। আবার মহম্মদ ইউনূসও গদির মায়া ত্যাগ করতে পারছেন না। কীভাবে ভোটটা বানচাল করে আরও ক্ষমতায় থেকে যেতে পারেন, তার নানা রকম ছক কষছেন। আবার বিএনপি-র সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ভাল। প্রশ্ন উঠছে, বিএনপি-র অস্ত্রেই বিএনপি-কে কোণঠাসা করার খেলা খেলছেন ইউনূস? পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে নির্বাচনে কট্টরপন্থীদের একচেটিয়া সমর্থন পাওয়ার কৌশল।