শেখ হাসিনা'আমেরিকার পরিকল্পিত আক্রমণ, পাকিস্তানের দ্বারা সম্পাদিত।' জুলাই ছাত্র আন্দোলন নিয়ে এই দুই দেশকে নিশানা করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্য প্রিন্টের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান, বাংলাদেশের জুলাই-অগাস্টে ছাত্রদের আন্দোলনের পিছনে কলকাঠি নেড়েছে বিদেশি শক্তি। তাদের ষড়যন্ত্রেই ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।
তিনি বলেন, 'এটাকে বিপ্লব বলে ডাকবেন না! এটা ছাত্রবেশে বাংলাদেশের উপর করা একটা জঙ্গি আক্রমণ।' তাঁর আরও মন্তব্য, 'এটা আমাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর একটা চক্রান্ত ছিল। পুলিশ হত্যা করেনি। হত্যা করেছে জঙ্গিরা। আর সেই দায় চাপানো হয়েছে আমাদের সরকারের উপর। যার ফলে মানুষের মত আমার বিরুদ্ধে চলে যায়।'
কী হয়েছিল?
আসলে গত বছর ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। তাঁর বিরুদ্ধে ১৪০০ মানুষকে হত্যার করার প্রতিবাদে চলছিল আক্রমণ।
ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এই বিদ্রোহ। মূলত কোটার বিরুদ্ধে চলছিল আন্দোলন। সেখান থেকে পরিস্থিতি কিছুদিনের মধ্যেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সারা দেশ জুড়ে হাসিনা বিরোধী আন্দোলন গড়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হয়।
আর এমন জটিল পরিস্থিতিতেই সেনা প্রধান ওয়াকার উজ জামানের পরামর্শে দেশ ছাড়েন হাসিনা। তিনি আশ্রয় নেন ভারতে। এখনও তিনি নয়াদিল্লিতে সেফ হাউজে রয়েছেন। সেখানে তাঁকে পূর্ণ নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে।
ইউনূসের দিকে আঙুল তুলেছেন হাসিনা
তাঁর এই পরিণতির জন্য তিনি আঙুল তুলেছেন বাংলাদেশের নোবেল প্রাপ্ত মহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে। হাসিনার দাবি করেন, ইউনূসই ষড়যন্ত্র করে তাঁকে গদি থেকে সরিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমেরিকা আমার থেকে সেন্ট মার্টিন আইল্যান্ড চায়। আমি দিতে রাজি হইনি। আমি রাজি হয়ে গেলেই ওরা আমাকে সরকার থেকে সরাত না। তবে আমি নিজের দেশকে বিক্রি হতে দিতে চাইনি।' তিনি আরও মন্তব্য করেন, 'এই গোটা ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা, অর্থ জোগাড় করা এবং সম্পাদনা করার কাজটা করেছে ইউনূস। তিনিই বাংলাদেশে জুলাই-অগাস্টে আমেরিকার জঙ্গিহানার পিছনে ছিলেন। ও একটা প্রতারক, নিজের স্বার্থে দেশের সঙ্গে প্রতারনা করেছে।'
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ
হাসিনা পরবর্তী সময়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে বাংলাদেশের। এখন পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের গলাগলি। এমনকী বাংলাদেশে ভারত বিরোধী নানা শক্তিকেও জায়গা দেওয়া হচ্ছে বলেই খবর। আর এমন পরিস্থিতিতেই পাকিস্তান ও আমেরিকার উপর জুলাই আন্দোলনের দায় চাপালেন হাসিনা। তাতে অবশ্য আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত একটু ভালো জায়গায় চলে গেল।