Bangladesh News: বাংলাদেশে একাত্তরের আত্মসমর্পণের সৌধ ভাঙচুর বিক্ষোভকারীদের। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের 'আত্মসমর্পণের চিহ্ন' বলা হত এই স্মৃতিসৌধকে। মূর্তির মাধ্যমে ভারতের সহায়তায় বাংলাদেশের জয় ও পাকিস্তানের আত্মসমপর্ণের মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছিল। আর সেটাই ভেঙে টুকরো-টুকরো করল বিক্ষোভকারীরা। এহেন ঘটনায় বাংলাদেশের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যেই, সেই দেশজুড়ে চরম নৈরাজ্যের নানা ছবি উঠে এসেছে। বহু প্রাণহানির ঘটনা তো বটেই, বাংলাদেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ দফতর, বাড়ি, স্মৃতিসৌধ, মূর্তি এমনকি মন্দিরেও হামলার অভিযোগ উঠছে। এবার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এক গুরুত্বপূর্ণ সৌধে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল।
মুজিবনগরে অবস্থিত একাত্তরের শহিদ স্মৃতিসৌধের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনশৃঙ্খলা ফেরানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
শশী থারুর তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, 'ভারত বিরোধী দুষ্কৃতীদের ১৯৭১ সালে মুজিবনগরের শহিদ স্মৃতি কমপ্লেক্সের মূর্তিগুলি ধ্বংস করার ছবি খুবই দুঃখজনক। ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত অনেক জায়গাতেই এমন ঘটনা ঘটেছে৷' তিনি জানান বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘুদের বাড়ি, মন্দির পাহারা দেওয়ার প্রেক্ষাপটের মাঝেও এই ছবি খুবই উদ্বেগজনক বলে জানান শশী থারুর।
Sad to see images like this of statues at the 1971 Shaheed Memorial Complex, Mujibnagar, destroyed by anti-India vandals. This follows disgraceful attacks on the Indian cultural centre, temples and Hindu homes in several places, even as reports came in of Muslim civilians… pic.twitter.com/FFrftoA81T
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) August 12, 2024
শশী থারুর আরও বলেন, 'কিছু আন্দোলনকারীর উদ্দেশ্যটা খুবই স্পষ্ট। সকল বাংলাদেশি ও সকল ধর্মের মানুষের স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য মহম্মদ ইউনুস এবং তাঁর অন্তর্বর্তী সরকারের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অস্থির সময়ে ভারত বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছে, কিন্তু এই ধরনের নৈরাজ্যকে কখনই ক্ষমা করা যায় না।
মূর্তিগুলি বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক
এই মূর্তিগুলো ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবি বলা যেতে পারে। সেই সময় পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী, ঢাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ (জিওসি-ইন-সি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিংয়ের উপস্থিতিতে পরাজয় স্বীকার করেন। সেই ঘটনার আদবেই এই মূর্তিগুলি গড়া হয়েছিল। এই মূর্তিটিকে 'আত্মসমর্পণের চিহ্ন' বলা হয়। এই ঘটনাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণ বলেও উল্লেখ করা হয়।
উপরের ছবিটি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তোলা হয়েছিল। এই দিনটি 'বিজয় দিবস' হিসেবে পালিত হয়। ফলে এই মূর্তি ভারতের বাংলাদেশকে স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করার, দুই দেশের বন্ধুত্বেরও প্রতীক।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সতর্কতা
বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত হিন্দুদের ওপর হামলার নানা খবর আসছে। হাজার হাজার মানুষ ভারতে আসার চেষ্টা করছেন। আন্দোলনকারীরা হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুরা ভারতে আসার চেষ্টা করছে। তাই শত শত বাংলাদেশী নাগরিক ও হিন্দুরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আসছেন। সীমান্তে প্রচুর পরিমাণে বিএসএফ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে ভারতে অবাধ প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।