বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুথ্থানের পর থেকেই দ্রুত বদলে গিয়েছে ছাত্র রাজনীতির গতিপ্রকৃতি। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে মহম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সেখানে জামাত ই ইসলামির বাড়বাড়ন্ত। আর তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে ছাত্র রাজনীতিতেও।
১৭ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনেও সেই প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট। এই নির্বাচনে ২৩টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’-এর প্যানেল।
৩ দশকে পর হয় নির্বাচন
১৯৯০ সালের পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও ছাত্র ভোট হয়নি। আর এতদিন পর হওয়া এই ভোটে জয় পেয়েছে জামাত ই ইসলামি সমর্থিত ছাত্র সংগঠন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জয় মিলেছে
কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের ভোট হয়। আর সেখানেও একাধিপত্য কায়েম করেছে ইসলামি ছাত্রশিবির।
সেই ভোটে তারা ভিপি, জিএস, এজিএস সহ বেশির ভাগ আসনে নিরঙ্কুশ জয় ছিনিয়ে এনেছে। এর আগে এমন কৃতিত্ব ছিল না তাদের।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বাড়ছে তারা
এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। সেখাও অধিকাংশ পদে জয়ী হয়েছে জামায়াতের ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল।
কেন বাড়ছে ইসলামি ছাত্রশিবির?
শেখ হাসনি পর্ব অতীত হওয়ার পর থেকেই সেই দেশে জামাত ই ইসলামির প্রভাব বাড়ছে। এই কট্টরপন্থী দল নিজেদের প্রভাব গোটা দেশেই ছড়িয়ে দিতে। আর তারই প্রথম ধাপ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্রদের মধ্যে প্রভাব বৃদ্ধি করতে চাইছে তারা। সেখানেই গড়ে তুলতে চাইছে সংগঠন। আর এই কাজটা যে তারা সুচারুভাবেই করতে পেরেছে, এটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। তাই একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে আসছে জয়।
এতে কি ২০২৬-এর ভোটে সুবিধা হবে?
আগামি বছর বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করেছেন ইউনূস। তাই সব দলই এখন থেকে নিজের মতো ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত। আর সেই খেলায় নেমে পড়েছে জামাত ই ইসলামিও। তারা ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে কট্টর ইসলামি ভাবনা ছড়িয়ে দিতে চাইছে। ইসলামকে মূলধন করেই ভোটে যাওয়ার পথ মসৃণ করতে চাইছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
তবে ছাত্র ভোট আর সাধারণ নির্বাচন দুটি আলাদা বিষয়। সেখানে ছাত্র ভোটের ফলাফল কতটা প্রভাব ফেলে, সেটাই দেখতে চাইছেন বিশেষজ্ঞরা। আর তার প্রমাণ পেতে চাইলে এখনও অপেক্ষা করা উপায় নেই।