scorecardresearch
 

Sunil Gangopadhyay Ancestral Home: নামল সেনা, বাংলাদেশে অবশেষে বেদখল-মুক্ত সুনীলের পৈতৃক ভিটে

কোটা-সংস্কার আন্দোলনের পর বাংলাদেশে এখন পালাবদলে পরিস্থিতি। চারিদিক উত্তপ্ত, অশান্ত। এমন বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিতে রাজশাহী শহরে পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের পাকা বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, এবার খবর মিলেছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মভিটে দখল করা হয়েছে। তবে শেষপর্যন্ত প্রয়াত সাহিত্যিকের সেই বাড়ি দখলমুক্ত হয়েছে।

Advertisement
দখলমুক্ত  বাংলাদেশে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে দখলমুক্ত বাংলাদেশে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে

কোটা-সংস্কার আন্দোলনের পর বাংলাদেশে এখন পালাবদলে পরিস্থিতি। চারিদিক উত্তপ্ত, অশান্ত। এমন বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিতে রাজশাহী শহরে পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের পাকা বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, এবার খবর মিলেছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মভিটে দখল করা হয়েছে। তবে শেষপর্যন্ত প্রয়াত সাহিত্যিকের সেই বাড়ি  দখলমুক্ত হয়েছে। 

মাদারীপুরের জেলার ডাসার উপজেলায় ১৯৩৪ সালে জন্মছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। সেই বাড়ি  বিএনপি নেত দখল নেন।  এই ঘটনার তিন দিন পর বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি দখলমুক্ত করেছে প্রশাসন। এ সময় আগের তালা ভেঙে নতুন করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তবে দখলদারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় পুলিশ ও সেনা সদস্যের উপস্থিতেতে বাড়িটি দখলমুক্ত করা হয় বলে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ জানান।

এর আগে গত শনিবার দুপুরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটেবাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে বিএনপির ডাসার উপজেলা কমিটির প্রাক্তন আইনবিষয়ক সম্পাদক সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে। ডাসার ও কালকিনি উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয়রা জানায়, কালকিনি উপজেলা ভেঙে নবগঠিত ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ায় মৌজায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাত একর ১৫ শতাক পৈতৃক জমি রয়েছে। এসব জমির মধ্যে দুই একর ৯৭ শতক জমি সরকারের খাসজমি হিসেবে রেকর্ড। শনিবার দুপুরে লেখকের পৈতৃক ভিটের একটি টিনশেড ঘরের (সুনীল স্মৃতি পাঠাগার) তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার ও তার লোকজন। পরে তারা লেখকের ব্যবহৃত সরঞ্জাম, বই, আসবাব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ একাধিক ছবি ভাঙচুর করেন। এরপর তারা ওই ঘরে ওএমএসের প্রায় এক ট্রাক চাল রেখে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন। এ ছাড়া লেখকের বাড়ির সামনে জেলা প্রশাসক কর্তৃক লাগানো একটি সাইনবোর্ডও ভেঙে সরিয়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে সোমবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান জেলার সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাহিত্যপ্রেমীরা। পরে সোমবার রাতে জেলা প্রশাসন থেকে লেখকের বাড়িটি পুনরুদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

Advertisement

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের নিয়ে লেখকের বাড়ি পরিদর্শনে যান ইউএনও উত্তম কুমার দাশ। এ সময় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবা ইসলাম, ডাসার থানার ওসি এস এম শফিকুল ইসলাম এবং কাজীবাকাই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার কালকিনি উপজেলার আধিকারিক উত্তম কুমার দাশ ঘোষণা করেন যে সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি ও জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ ও মিলিটারি কনভয় গিয়ে জমি দখলমুক্ত করেছে। আপাতত প্রশাসনেক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ওই জমি। শীঘ্রই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন ও তাঁর নামে মিউজিয়াম তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি। ভবিষ্যতে যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে, তাও নিশ্চিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফে  ওই বাড়ি ফাঁকা করা হয়েছে। বের করে আনা হয় ভিতরে মজুত রাখা চাল। যে তালা ভেঙে বিএনপি নেতা বাড়ি দখল করেছিলেন, তাও পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।

১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর মহকুমার রাজৈরের আমগ্রামের মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সুনীল। তার পৈতৃক ভিটা পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে। দেশভাগের পর ভারতে চলে গেলেও মাটির টানে তিনবার পৈতৃক ভিটায় ছুটে আসেন তিনি।   তার স্মরণে ২০০৪ সালে সুনীল সাহিত্য চর্চা ও গবেষণাকেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়। তবে সেটি আলোর মুখ দেখেনি। ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর কলকাতায় প্রয়াত হন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement