এপার বাংলায় এবার তেমন দেখা মিলছে না ইলিশের। ফি বছর রান্না পুজোর আগে ইলিশের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। গত বছরেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু এবছর রান্না পুজোর আগে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। দিঘা, ডায়মন্ডহারবার অথবা বাংলাদেশ থেকে ইলিশের আমদানি না থাকায় কার্যত হাহাকার দেখা দিয়েছে জলরে রুপোলি শস্যের। তাই এবারের বর্ষায় তেমন পছন্দমতো ইলিশ না পেয়ে মন খারাপ এপারের ভোজন রসিক বাঙালির। তবে ওপার বাংলাতেও এবার তেমন দেখা নেই ইলিশের। এরমধ্যেই অবশ্য বাংলাদেশে খবরের শিরোনামে আড়াই কেজির এক ইলিশ বাবাজী। এবারের মরশুমে এটাই নাকি সবচেয়ে বড় ইলিশ সেদেশে। মাছটি ধরা পড়েছে বরগুনার তালতলীর পায়রা নদীতে।
পায়রা নদীতে শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ছোটবগী গ্রামের জেলে আকব্বর মাঝির জালে ধরা পড়ে আড়াই কেজি ওজনের মাছটি। স্থানীয় বাজারে ইলিশটি বিক্রির জন্য তোলা হলে একনজর দেখার জন্য উৎসাহী জনতা ভিড় করতে থাকেন। শেষপর্যন্ত নিলামে তিন হাজার ২০০ টাকায় ইলিশটি ক্রয় করেছেন মাছ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন।
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, শুক্রবার ছোটবগী এলাকার তালুকদার কান্দা এলাকার জেলে আকাব্বর মাঝি নদীতে জাল ফেলেন। রাতে তেমন একটা মাছ না পাওয়ায় তিনি শনিবার ভোরে পুনরায় নদীতে জাল ফেলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে জাল তুলে দেখেন অন্য ইলিশের সঙ্গে বড় মাছটি ধরা পড়েছে। এই মরশুমে বরগুনায় বড় আকৃতির ইলিশ এই প্রথম ধরা পড়েছে বলে জানান জেলেরা। মাছটি বিক্রির জন্য ব্যবসায়ী আনোয়ার দাম হাঁকিয়েছিলেম চার হাজার টাকা। ৩৬০০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠলেও মাছটি বিক্রি করেননি তিনি। আনোয়ার বলেন, 'এই মরশুমে সর্বোচ্চ এক কেজি ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ধরা পড়েছিল। এত বড় মাছ গত দু-তিন বছরে চোখে পড়েনি।' তিনি জানান, "গত দু-তিন বছরে আড়াই কেজির ইলিশ চোখে পড়েনি। সকালে বাজারে পায়রা নদীর এত বড় ইলিশ দেখে অবাক হয়ে যাই। তাই দেরি না করে দ্রুত মাছটি কিনে বিক্রির জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করতে থাকি। কয়েকজন ফোন দিয়েছে সঠিক মূল্য পেলেই মাছটি বিক্রি করব।"
এই বিষয়ে তালতলী উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম বলেন, এই মরশুমে কয়েকটি বড় ইলিশ ধরা পড়েছে। তবে দুই কেজি ওজনের মাছ পাওয়া যায়নি বলে জানি। এই প্রথম জানতে পারলাম আড়াই কেজি ওজনের ইলিশের কথা। তবে আমার ধারণা, এবার এ রকম বড় ইলিশ আরও পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি আরও বলেন, পায়রা নদীতে বড় বড় ইলিশ পাওয়া আমাদের জন্য অনেক সুখবরও বটে। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সুফল হলো এই বড় সাইজের ইলিশ।