বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে USAID ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা বলেছেন। তবে এই অর্থ কাদের দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য জানা নেই। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিদেশ মন্ত্রকের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বিদেশ উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে কোনও স্পষ্ট তথ্য নেই কাকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কে সেটা খরচ করেছে। আমরা এখনো জানি না। আমরা জানি না বিষয়টা কে করেছে এবং আমাদের যে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো তারা বলেছে, এ রকম কোনো এন্ট্রি তাদের কাছে নেই।
একটি এনজিওতে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তৌহিদ হোসেন বলেন, কোনও টাকা এনজিও ব্যুরোর অ্যাপ্রুভাল ছাড়া ক্যাশ করা সম্ভব না। কাজেই ২৯ মিলিয়ন ডলারের ব্যাপারে এনজিও ব্যুরো কিছু দেখতে পাচ্ছে না। তাহলে আমাদের আপাতত তাদের (এনজিও ব্যুরো) কথা মেনে নিতে হবে। তারপরে যদি কোনও তথ্য বের হয় সেটাকে আমরা দেখব। এর আগে বাংলাদেশকে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া নিয়ে সম্প্রতি দুই দফা মুখ খুলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার এমন এক সংস্থার কাছে গেছে, যে সংস্থার নাম আগে কেউ শোনেনি।
এদিকে, বাংলাদেশের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর ডিরেক্টর জেনারেল মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, "আমাদের রেকর্ডে টাকার পরিমাণ আমরা দেখিনি"। এই ব্যুরো বাংলাদেশ সরকারের একটি সংস্থা যা বৈদেশিক সহায়তায় বাংলাদেশ জুড়ে পরিচালিত এনজিওগুলির কার্যক্রমকে সহজতর করে।
এনজিও বিষয়ক ব্যুরো একটি সরকারি সংস্থা যা বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালের বৈদেশিক অবদান (স্বেচ্ছাসেবী কার্যকলাপ) নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের অধীনে নিবন্ধিত বিদেশি সাহায্যপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাগুলির কার্যক্রমকে সহজতর করে এবং রাষ্ট্রের কাছে তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করে। "ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় ২৯ মিলিয়ন ডলার বলেছিলেন, আমরা আমাদের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মাধ্যমে সেই পরিমাণ অর্থ শনাক্ত করতে পারিনি। কারণ যদি তারা বলতে পারে যে কোন এনজিও জড়িত, তাহলে আমরা নির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করতে পারি, তবে সামগ্রিকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সেই পরিমাণ ডলার এখনও এনজিওগুলির জন্য ব্যয় করা হয়নি", বলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (ইনচার্জ) মো. আনোয়ার হুসেন। এএনআই-কে এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তিনি।
ইউএসএআইডি (ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) এনজিও বিষয়ক ব্যুরোকে পাশ কাটিয়ে অর্থ সরবরাহ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না।" আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ইউএসএআইডির তহবিল স্থগিতের পর, বাংলাদেশের এনজিও খাত তাৎক্ষণিকভাবে গভীর সংকটে নেই, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি এনজিও তহবিলের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ সরকারের এই কর্মকর্তা আরও নিশ্চিত করেছেন যে দেশের ৭৫ টিরও বেশি এনজিও কেবল আমেরিকান সাহায্য সংস্থার কাছ থেকে তহবিল পায় না, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক দাতাদের কাছ থেকেও অনুদান পায়। "ইউএসএআইডি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত প্রকল্পগুলিতে সহায়তা করে এবং এগুলি এখনও চালু আছে, স্থগিত নয়," তিনি বলেন। হোসেন আরও ব্যাখ্যা করেন যে, "যদি বিদেশি দাতারা সরাসরি নিবন্ধিত এনজিওগুলিতে অনুদান দেন, তবেই আমরা অর্থের একটি রেকর্ড রাখতে পারব। ইউএসএআইডি সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ আনে, যা পরে সংস্থাগুলিতে বিতরণ করা হয়। আমাদের এনজিও বিষয়ক রেকর্ডে এটি প্রতিফলিত হয় না।"