আফগানিস্তানে তালিবানদের (Talibans in Afghanistan) দখল গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আফগানিস্তান সরকার তালিবানদের সামনে আত্মসমর্পণ করেছে। এই কঠিন সময়ে বিশ্ববাসী, আফগানিস্তানের মানুষের জন্য প্রার্থনা করছেন। এই সুন্দর দেশটি এক সময় পর্যটকদের একটি আকর্ষণীয় স্থান ছিল। বলিউডের অনেক পরিচালকও আফগানিস্তানের মাটিতে ছবির শ্যুটিংয়ের ঝুঁকি নিয়েছিলেন।
ধর্মাত্মা
আফগানিস্তানে শ্যুট করা প্রথম হিন্দি ছবি হল 'ধর্মাত্মা'। ৪৬ বছর আগে ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, এই ছবিটি বানিয়েছিলেন অভিনেতা-পরিচালক এবং প্রযোজক ফিরোজ খান। ছবিতে আফগানিস্তানের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থানগুলি দেখানো হয়েছিল। 'ধর্মাত্মা'-র জনপ্রিয় গান 'কেয়া খুব লাগতি হো' শ্যুটিং হয়েছিল আফগানিস্তানের বামিয়া বুদ্ধ' -তে। যদিও পরবর্তীকালে তালিবানরা আমেরিকান সেনাবাহিনীকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বুদ্ধ মূর্তিটি ভেঙ্গে ফেলে।
এজেন্ট বিনোদ
সইফ আলি খান এবং করিনা কাপুর অভিনীত ছবি 'এজেন্ট বিনোদ'-র একদম শুরুর দৃশ্যটিই আফগানিস্তানে শ্যুট করা হয়েছে। শ্রীরাম রাঘবন পরিচালিত এই ছবিটি ২০১২ সালে মুক্তি পায়। 'দস্ত-ই-মারগো' -কে শ্যুটিং লোকেশন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। বালুকাভূমিতে শ্যুট করা দৃশ্যটি, দর্শকদের নজর কেড়েছিল।
জানাশিন
ফারদিন খান এবং সেলিনা জেটলি অভিনীত রোম্যান্টিক থ্রিলার 'জানাশিন'-র শুটিং হয়েছিল আফগানিস্তানে। সেই সময় অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই সেখানে কাজ করেছিলেন অভিনেতা-পরিচালক ফিরোজ খান। যেই সময় এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছিল, তখন আফগানিস্তান এবং তালেবানদের মধ্যে যুদ্ধের পরিবেশ ছিল। এত বড় ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, ফিরোজ খান আফগানিস্তানে তাঁর ছবি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তোরবাজ
পরিচালক গিরিশ মালিকের ছবি 'তোরবাজ' গত বছর মুক্তি পেয়েছিল। সঞ্জয় দত্ত, নার্গিস ফাকরি, রাহুল দেবের মতো অভিনেতাদের এই ছবিতে দেখা গিয়েছিল। আফগানিস্তানের শিশু আত্মঘাতী বোমারুদের উপর ভিত্তি করে ছবির গল্প। তাই সেই দেশেই ছবির কিছু অংশ শ্যুটি হয়েছে। এ ছাড়া বাকি কিছু দৃশ্যের শ্যুটিং ভাইজ্যাক এবং কিরগিজস্তানেও হয়েছে।
কাবুল এক্সপ্রেস
জন আব্রাহাম এবং আরশাদ ওয়ার্সি অভিনীত ছবি 'কাবুল এক্সপ্রেস'-র একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শ্যুট করা হয়েছিল। ২০০৬ সালে এই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সময় আফগানিস্তান থেকে তালেবানদের সন্ত্রাস শেষ হয়ে গিয়েছিল। গ্রীন প্যালেস, বালা হিসার ফোর্ট, দরুল আমান প্যালেস এবং পাঞ্চশির উপত্যকায় ছবির শ্যুটিং হয়েছিল।
'কাবুল এক্সপ্রেস'-র পরিচালক কবির খান শুটিংয়ের এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে জানিয়েছিলেন, ছবির সঙ্গে যুক্ত কলা কুশলীরা তালেবানদের কাছ থেকে হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন। ছবিতে আফগানিস্তানের হানিফও একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। নিজের অভিনয় কেরিয়ার গড়ার জন্য তালিবানরা অপহরণ করে নির্মমভাবে পিটিয়েছিলেন। এই চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় আফগান সরকার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছিল।
খুদা গাওয়া
১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'খুদা গাওয়া' মুকুল এস আনন্দের পরিচালনায় এসেছিল। অমিতাভ বচ্চন এবং শ্রীদেবী এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। কাবুল ও মাজার-এ-শরীফে এই ছবির কিছু অংশের শ্যুট হয়েছিল। ১৯৯১ সালে এই ছবির শুটিং চলাকালীন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নজিব্বুল্লাহ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছিলেন।
১৯৯৬ সালে আফগানিস্তান দখল করার পর তালিবানরা রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নজিববুল্লাহকে নির্মমভাবে পিটিয়ে কাবুলের আরিয়ানা চকে একটি স্তম্ভ থেকে ঝুলিয়ে দেয়।